রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আয়েন উদ্দিন নিজ নির্বাচনী এলাকায় ফিরেছেন। বুধবার (২৯ নভেম্বর) বেলা ১১টার দিকে ঢাকা থেকে রাজশাহীর শাহ মখদুম বিমানবন্দরের অবতরণের পর নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য দেন তিনি। বক্তব্যের একপর্যায়ে কেঁদেছেন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বঞ্চিত এই সংসদ সদস্য। 

আয়েন উদ্দিন বলেন, আজ পবা-মোহনপুরের মানুষ তাদের মাটির সন্তানকে হারিয়েছে। তাই বহিরাগত বর্গিরা এসে পবা-মোহনপুরের মাটি লুট করার জন্য অরাজকতা সৃষ্টির চেষ্টা করছে। আমি নির্বাচন করব কি করব না, এ ব্যাপারে আমার নেতাকর্মীরা যে দিক-নির্দেশনা দেবেন, আমি সেটাই মেনে চলব।

তিনি বলেন, অন্যান্য দল এবার নির্বাচনে আসবে না। তাই এ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হলে বহিষ্কার বলে কোনো কথা নেই। আমি নির্বাচন করব কি করব না সেটি বড় কথা নয়। আমি আপনাদের সঙ্গে আছি। আপনাদের সঙ্গেই থাকব। তবে আমি যদি সেই অবস্থা সৃষ্টি করতে পারি, তবেই আমি আপনাদের সামনে এসে দাঁড়াব।

আয়েন উদ্দিন বলেন, আরেকটি কথা, মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের সময়সীমা আগামী ১৭ ডিসেম্বরের মধ্যে অনেক প্রেক্ষাপট পরিবর্তন হবে। এরই মধ্যে বিএনপি ও অন্যান্য দল নির্বাচনে আসতে পারে। যদি তারা নির্বাচনে আসে, তাহলে পবা-মোহনপুর আসনের জন্য এই আয়েন উদ্দিন অপরিহার্য হয়ে পড়বে। সেদিন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে নির্দেশনা দেবেন, দল যে নির্দেশনা দেবে, সেটিই মাথা পেতে নেব। সেই দিনের জন্য আপাতত মনোনয়নপত্র তুলব। 

অশ্রুসিক্ত কণ্ঠে তিনি বলেন, আমি পবা-মোহনপুরের মাটির সন্তান। এলাকার মানুষকে কোনো অত্যাচার করিনি, কষ্ট দেইনি। আমার ভুলত্রুটি হতে পারে। সেটি আপনারা ক্ষমা করে দেবেন। তারপরও আজ এই পরিস্থিতির শিকার হলাম। আমার কার্যালয় ভাঙচুর করা হয়েছে। এই বিমানবন্দরে এসে আমার সম্পর্কে খারাপ বক্তব্য দেওয়া হয়েছে। আমার মা–বাবা যখন রোজা রেখে নৌকার ভোট দিতে গেছেন, তখন যাদের অনেকের জন্মই হয় নাই, তারাও আজ কটূক্তি করে। আমি নৌকার টিকিট পাইনি, তারপরও আপনারা আমার কাছেই এসেছেন। এই ঋণ আমি কোনো দিন শোধ করতে পারব না। আমার শরীরে এক বিন্দু রক্ত থাকা পর্যন্ত আমি আপনাদের পাশে ছিলাম, থাকব। এ সময় তিনি কাঁদেন। নেতাকর্মীদেরও কাঁদতে দেখা যায়।  

এ সময় বিমানবন্দরে রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার, মোহনপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজ উদ্দিন কবিরাজ, পবার নওহাটা পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আজিজুল হক, মোহনপুর উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ইকবাল আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক শাহীন, পবা উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ইমদাদুল হক,সাধারণ সম্পাদক তৌফিক ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

পরে বিকেল ৪টার দিকে আয়েন উদ্দিনের পক্ষে শেখ মো. শিমুল নামে এক ব্যক্তি রাজশাহী জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে মনোনয়নপত্র উত্তোলন করেন। 

জানা গেছে, ২০১৪ ও ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আয়েন উদ্দিন আওয়ামী লীগের মনোনয়নে টানা দুই মেয়াদ এ আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এবার তাকে বাদ দিয়ে রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।

শাহিনুল আশিক/আরএআর