দীর্ঘ তিন মাস ধরে কুকুরের কামড়ে আহত হয়ে হাসপাতালের বেডে কাতরাচ্ছে নুসরাত। ঠাকুরগাঁও ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসকরা তাকে বারবার রেফার্ড করেছেন রংপুরে। কিন্তু টাকার অভাবে তার উন্নত চিকিৎসার করাতে পারেননি মা। অর্থাভাবে বন্ধ আছে নুসরাতের চিকিৎসা।

গতকাল সোমবার (২৭ নভেম্বর) নুসরাতকে নিয়ে ঢাকা পোস্টে সংবাদ প্রকাশিত হয়। সংবাদটি ঠাকুরগাঁওয়ের পুলিশ সুপার উত্তম প্রসাদ পাঠকের নজরে আসে। মঙ্গলবার বিকেল ৪টায় তিনি ছুটে যান ঠাকুরগাঁও ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নুসরাতের কাছে। তিনি নুসরাতের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ কথা বলেন। নুসরাতের মায়ের কাছে তার বিষয়ে খোঁজখবর নেন এবং তাদের পাশে থাকার আশ্বাস দেন। তিনি নুসরাতের চিকিৎসা করাতে সহযোগিতা লাগলে পুলিশ সুপারের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতারও আশ্বাস দেন। 

এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁওয়ের পুলিশ সুপার উত্তম প্রসাদ পাঠক বলেন, পুলিশ আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের মানবিক কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় আমরা ঠাকুরগাঁও জেলায় বিভিন্ন ধরনের মানবিক কাজ করে আসছি দীর্ঘদিন ধরে। আমরা গতকাল ঢাকা পোস্টে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানতে পারি নুসরাত নামে একটি মেয়ে অর্থের অভাবে চিকিৎসা করাতে পারছে না। তখনই আমার ঠাকুরগাঁও জেলার পুলিশ তার পাশে তার চিকিৎসার জন্য সকল ধরনের দায়িত্ব নিয়েছি।

নুসরাতের মা লাইলী বেগম বলেন, আমার মেয়েটা দীর্ঘ তিন মাস ধরে কুকুরের কামুড়ে অসুস্থ। আমি রংপুর নিয়ে গেছিলাম কিন্তু টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে পারিনি। অনেকের কাছে সাহায্য চাচ্ছি। ঠাকুরগাঁওয়ের পুলিশ সুপার আমার মেয়ের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন এই বিপদে। তিনি আমার যে উপকার করেছেন এটা আমি সারা জীবনেও ভুলতে পারবো না। আল্লাহ আমাদের পুলিশ সুপারের মঙ্গল করুক।

ঠাকুরগাঁও ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম বলেন, নুসরাত নামে বাচ্চাটি আমাদের হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। বাচ্চাটি গত দুই সেপ্টেম্বর কুকুরের কামড়ে আক্রান্ত হয়। এরপর সে ভ্যাকসিন নিয়েছে। এক মাস পরে তার কিছু শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়। কামড়ানোর জায়গাটিতে ব্যথা। এক মাসের বেশি এখানে ভর্তি রয়েছে সে। এছাড়া সে রংপুরে চিকিৎসা করিয়েছে। ব্যথা যেহেতু যাচ্ছে না সেজন্য আমরা এখানে তাকে পর্যবেক্ষণে রেখেছি। ৯০ দিন না গেলে আমরা এই মুহূর্তে তেমন কিছু বলতে পারছি না। তবে আমাদের কাছে মনে হচ্ছে যেহেতু এখন পর্যন্ত তেমন কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না তাই বাচ্চাটির মানসিক সমস্যা হতে পারে। পুলিশ সুপার এখানে এসেছিলেন তিনি বাচ্চাটির চিকিৎসার বিষয়ে আমাদের সঙ্গে কথা বলেছেন।

নুসরাত ঠাকুরগাঁও পৌরসভার মিলননগর এলাকার মো. হারুনের মেয়ে। বর্তমানে সে ঠাকুরগাঁও আর কে স্টেট উচ্চ বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণিতে পড়াশোনা করছে।

আরিফ হাসান/আরএআর