খাগড়াছড়িতে আ.লীগের এমপি হতে চান যারা
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আগামী ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে। এরই মধ্যে শুরু হয়েছে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হওয়ার দৌড়ঝাঁপ। পাহাড়ি মানুষের জীবনযাত্রা থেকে সংস্কৃতি কিংবা রাজনীতি সবক্ষেত্রে সমতলের জেলাগুলোর চেয়ে ভিন্ন। জটিল সমীকরণের খাগড়াছড়ি জেলায় শুরু হয়েছে নির্বাচনী আলোচনা। ইতোমধ্যেই এই আসনে নৌকার প্রার্থী হতে ১০ জন কিনেছেন দলীয় মনোনয়ন ফরম।
পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ি জাতীয় সংসদের ২৯৮ নং আসন। ৯ উপজেলা ও তিন পৌরসভা নিয়ে একটি মাত্র আসন এ জেলায়। ১৯৯১ সাল থেকে এই আসনে ছয়বার সংসদ নির্বাচনে ৫ বারই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছেন।
বিজ্ঞাপন
খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক চন্দন কুমার দে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
খাগড়াছড়ি আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে রয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা। এ ছাড়া আরও রয়েছেন নারী সংসদ সদস্য ও জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বাসন্তী চাকমা, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ সভাপতি রণ বিক্রম ত্রিপুরা, সাবেক সংসদ সদস্য যতীন্দ্র লাল ত্রিপুরা, জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি ও সাবেক জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কংজরী চৌধুরী, জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি চাইথোঅং মারমা।
জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি ও পানছড়ি ডিগ্রি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ সমির দত্ত চাকমা, জেলা আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক এবং জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক জুয়েল চাকমা, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক উপ কমিটির সদস্য ভবেশ্বর রওয়াজা নিকি এবং রাঙ্গামাটি জেলার জসিম উদ্দিন চৌধুরী।
তবে স্থানীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে প্রার্থিতার আলোচনায় এগিয়ে রয়েছে দুই বিয়াই বর্তমান সংসদ সদস্য কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা রণ বিক্রম ত্রিপুরার নাম। গত ১০ বছরে জেলায় সড়ক, সেতু ও অবকাঠামো উন্নয়ন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বিদ্যুৎ ক্ষেত্রের সাফল্যের ধারা ধরে রাখতে চান দলটি।
বর্তমান সংসদ সদস্য কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা জানান, দলে কোনো বিভেদ নেই। দলের যে কেউ দল থেকে নমিনেশন চাইতেই পারে। তিনি এ আসনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে জেলায় শান্তিপূর্ণ পরিবেশ এবং সহাবস্থান নিশ্চিত করেছেন। এ অঞ্চলের উন্নয়নের স্বার্থে যা খুবই দরকার। দল পুনরায় তাকেই প্রার্থী হিসেবে মনোনীত করবেন। নির্বাচিত হলে সকলকে নিয়েই কাজ করার কথা জানান তিনি।
বীর মুক্তিযোদ্ধা রণ বিক্রম ত্রিপুরা জানান, তিনি দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের সঙ্গে সম্পৃক্ত। বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ করতে গিয়ে জেল খেটেছেন। জিয়াউর রহমানের শাসনামলে পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রবেশ নিষিদ্ধ ছিল। এতো নির্যাতিত হওয়ার পরও দল ত্যাগ করেননি। তাই দল তাকে নমিনেশন দিলে সকলকে নিয়েই কাজ করবেন।
অপরদিকে জেলায় জাতীয় পার্টি থেকেও প্রার্থী হতে দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে চারজন কিনেছেন দলীয় নমিনেশন ফরম। নিশ্চিত করেছেন খাগড়াছড়ি জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি মণিন্দ্র লাল ত্রিপুরা।
একাদশ সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য সোলায়মান আলম শেঠ পুনরায় এই আসনে নির্বাচনে অংশ নিতে সংগ্রহ করেছেন দলীয় মনোনয়ন ফরম। এছাড়াও কেন্দ্রীয় সদস্য শ্রাবণী চাকমা, মিথিলা রওয়াজা এবং খাগড়াছড়ি জেলা সভাপতি মণিন্দ্র লাল ত্রিপুরা কিনেছেন দলীয় নমিনেশন ফরম।
অন্যদিকে নির্বাচনি মাঠে নেই প্রধান বিরোধীদল বিএনপি। জেলায় সাংগঠনিকভাবে বেশ শক্ত অবস্থান থাকা দলটি বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচনে না যাওয়ার কথা বলছেন।
সব ছাপিয়ে খাগড়াছড়ি আসনে ফ্যাক্টর পাহাড়ের আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলসমূহ। গত কয়েকটি নির্বাচনে ইউপিডিএফ সমর্থিত প্রার্থীরা উল্লেখযোগ্য ভোট পেয়েছিলেন। তবে দেশের চলমান পরিস্থিতিতে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন না জানিয়েছেন আঞ্চলিক সংগঠন ইউপিডিএফ’র খাগড়াছড়ি জেলা সংগঠক অংগ মারমা।
এএএ