নিহত মাহফুজুর রহমান

মাত্র দুই সপ্তাহ আগে বাবার কাছে বায়না করে মোটরসাইকেল কিনে নিয়েছিল মাহফুজুর রহমান (১৭)। শখের সেই মোটরসাইকেল নিয়ে বৃদ্ধ নানা-নানিকে দেখতে ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছিল সে। কিন্তু ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছে মাহফুজ। একমাত্র ছেলে সন্তানকে হারিয়ে পরিবারে চলছে শোকের মাতম।

বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) বিকেলে ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কে দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছে শরীয়তপুরের ছেলে মাহফুজ। 

নিহত মাহফুজুর রহমান শরীয়তপুরের নড়িয়া পৌরসভা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মিলন জমাদ্দারের একমাত্র ছেলে। পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডে মিলন জমাদ্দারের বসতবাড়ি।

স্থানীয় ও পরিবার সূত্রে জানা যায়, মাহফুজ খুবই মেধাবী শিক্ষার্থী ছিল। গত বছর মাধ্যমিক পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পাওয়ার পর বাবা মিলন জমাদ্দার তাকে আইফোন কিনে দিয়েছিলেন। কিছুদিন ধরে সে মোটরসাইকেলের জন্য বায়না করেছিল। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা নিয়ে বাবা জানতেন বলে প্রথমে কিনে দিতে চাননি। অনেক রাগ, অভিমানের পর দুই সপ্তাহ আগে ছেলেকে ৫ লাখ টাকা দিয়ে মোটরসাইকেল কিনে দিয়েছিলেন মিলন জমাদ্দার। শখের সেই মোটরসাইকেল নিয়ে বৃদ্ধ নানা-নানিকে দেখতে যাওয়ার পথে ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কে দুর্ঘটনায় মারা গেছে মাহফুজ। ছেলের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য এক সপ্তাহ আগে কানাডা যেতে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছিলেন মিলন জমাদ্দার। কিন্তু এক দুর্ঘটনা সব কিছু শেষ করে দিল। 

মাহফুজের চাচা ইব্রাহিম হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, শখের একটি মোটরসাইকেল আমার পরিবারের সারা জীবনের কান্না হয়ে রইল। প্রচুর মেধাবী ছিল ভাতিজা আমার। সুদর্শন তাজা প্রাণ লাশবাহী ফ্রিজে শুয়ে আছে এখন। আমাদের সাথে কথা কয় না। এই শোক কেমনে সইব। দোয়া করবেন যেন শোক সইতে পারি।

নড়িয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, মিলন জমাদ্দারের ছেলে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় মারা গেছেন বলে জানতে পেরেছি। পরিবারের একমাত্র সন্তানকে হারিয়ে পরিবারটিতে শোকের মাতম  চলছে। এমন দুর্ঘটনা হৃদয়বিদারক।

সাইফ রুদাদ/আরএআর