প্যান্ট চুরি করলেন ছাত্রলীগ নেতা, ভিডিও ভাইরাল!
রাজশাহীর তানোরে দিনে-দুপুরে প্যান্ট চুরে করে ভাইরাল হয়েছেন জেলা ছাত্রলীগ নেতা মিজানুর রহমান ওরফে জুয়েল রানা। ১০ এপ্রিল (শনিবার) তানোর পৌর এলাকার প্রদীপ সুপার মার্কেটে এ ঘটনা ঘটে। মার্কেটের সিসিটিভি ফুটেজে ঘটনার প্রমাণ পাওয়া যায়। পরে সেই ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে।
অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা জুয়েল রানা তানোর উপজেলার চাপড়া এলাকার মমতাজ উদ্দিনের ছেলে। তিনি জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক।
বিজ্ঞাপন
ভাইরাল হওয়া ভিডিওটিতে দেখা গেছে, দুজন ক্রেতা দোকান থেকে বেরিয়ে যান। ওই সময় ছাত্রলীগ নেতা জুয়েল রানা দোকানের সামনে এসে বাইরে টাঙানো একটি জিন্স প্যান্ট নামান। পরে সেই প্যান্ট নিয়ে সোজা মার্কেট থেকে বেরিয়ে যান।
ঘটনাস্থল প্রদীপ সুপার মার্কেটের স্টাইল কালেকশনের মালিক প্রসেনজিত কুমার জানান, দুপুর ১২টা থেকে ২টা পর্যন্ত তিনি দোকানের বাইরে ছিলেন। এ সময় দোকানে ছিলেন তার ছোট ভাই। তিনি এসে বাইরে ঝোলানো দুটি প্যান্টের একটি পাননি। তার ভাইও বিক্রির বিষয়টি নিশ্চিত করতে পারেননি। অনেক খুঁজে সন্ধান না পেয়ে পরদিন পাশের দোকানে থাকা সিসিটিভি ফুটেজ দেখেন। সেখানেই ছাত্রলীগ নেতার প্যান্ট চুরির ঘটনা ধরা পড়ে।
পরে তিনি নিজেই কথা বলেন ছাত্রলীগ নেতা জুয়েল রানার সঙ্গে। প্রথমে তিনি চুরির ঘটনা অস্বীকার করেন। বিষয়টি বাজার বণিক সমিতির নেতাদের জানালে ওই দিন দুপুরে গোল্লাপাড়া বাজার বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা আওয়ামী লীগ সাংগঠনিক সম্পাদক পাপুল সরকারের চেম্বারে সালিস বসে। সেখানে নিজের অপরাধ স্বীকার করেন জুয়েল রানা। পরে তার কাছ থেকে প্যান্টের দাম ৩২০ টাকা আদায় করে ছেড়ে দেন নেতারা।
তবে বিষয়টি আসলে চুরি নয় বলে জানিয়েছেন ছাত্রলীগ নেতা জুয়েল রানা। তিনি বলেন, ওই সময় তিনি অপ্রকৃতস্থ ছিলেন। কথা বলতে পারছিলেন না। প্যান্টটি তিনি জেনে শুনেই নিয়েছেন। কিন্তু দাম পরিশোধে ভুলে গেছেন। পরে তিনি দাম পরিশোধ করছেন।
তবে বিষয়টিকে চুরি বলে মন্তব্য করেছেন গোল্লাপাড়া বাজার বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা আওয়ামী লীগ সাংগঠনিক সম্পাদক পাপুল সরকার। তিনি বলেন, সালিসে তিনি নেশার ঘোরে নিয়ে যাওয়ার দাবি করেছেন। কিন্তু ভিডিও ফুটেজ দেখে তেমনটি মনে হয়নি। তিনি দোষ স্বীকার করে সবার সামনে ক্ষমা চেয়েছেন।
সমিতির পক্ষ থেকে তাকে পুলিশে সোপর্দ করার কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু দোকান মালিক জুয়েল রানার ঘনিষ্ঠ তিনি। দাম পাওয়ার পর তিনি আর আইনি ব্যবস্থা নিতে রাজি হননি। ফলে সেখানেই বিষয়টি সমাধান হয়ে যায়।
এলাকার ব্যবসায়ীরা জানান, ছাত্রলীগ নেতা জুয়েল রানা মাদকাসক্ত। মাঝেমধ্যেই ছোটোখাটো চুরি করে আসছিলেন তিনি। কিন্তু শক্ত প্রমাণ না থাকায় তাকে ধরা যাচ্ছিল না এতদিন।
ফেরদৌস সিদ্দিকী/এসপি/জেএস