গুজব ছড়িয়ে শ্রমিকদের উত্তেজিত করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন গাজীপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈয়দ মোরাদ আলী। বৃহস্পতিবার (৯ নভেম্বর) বিকেলে পুলিশের সঙ্গে শ্রমিকদের সংঘর্ষের ঘটনায় গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ীতে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান। 

ইউএনও সৈয়দ মোরাদ আলী বলেন, দুপুরের খাবারের বিরতিতে যখন শ্রমিকরা বের হয় এবং যখন ফেরে তখনই শ্রমিকদের মাঝে গুজব ছড়িয়ে দেওয়া হয়। তাদেরকে সহজ টার্গেট পেয়ে গুজব ছড়িয়ে দেয়। তারা যখন লাঞ্চ করে ফিরছিল তখন পুলিশ ধাওয়া করেছে০- এ রকম একটি গুজব ছড়িয়ে দেওয়া হয়। আমরা সকাল থেকেই এখানে ছিলাম, এ রকম কোনো ঘটনা ঘটেনি। এ রকম মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে দিয়ে উত্তেজিত করে দেওয়া হয়। পরবর্তীতে তারা রাস্তায় নেমে আসে, তাদেরকে আমরা নিবৃত্ত করার চেষ্টা করি। তাদের সঙ্গে আমরা কথা বলছিলাম, কিন্তু তারা যখন একপর্যায়ে মারমুখী আচরণ করে তখন আমরা পিছিয়ে চলে আসি। আমরা ধৈর্য ধরলে তারা শান্ত হয়ে বেরিয়ে যায়।

তিনি বলেন, আমরা শ্রমিকদের আশ্বস্ত করার চেষ্টা করছি। গুজব ঠেকাতে কারখানা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে, হ্যান্ড মাইকের মাধ্যমে তাদের বুঝানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। তারা যেন যে কোনো তথ্য বা কোনো নিউজ যাচাই না করে উত্তেজিত না হয়। আর গুজব যারা ছড়াচ্ছে তাদের খুঁজে বের করতে কাজ করা হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থাসহ প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরের লোকজন কাজ করে যাচ্ছে বলে তিনি জানান।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পোশাকশ্রমিকদের ন্যূনতম বেতন ২৩ হাজার টাকা করার দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে গাজীপুরের বিভিন্ন কারখানার শ্রমিকরা আন্দোলন করে আসছেন। এই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার সকালেও শ্রমিকরা আন্দোলনে নামেন। সকাল ৮টার দিকে গাজীপুরের চান্দনা চৌরাস্তা-শিববাড়ী সড়কে বন্ধ করে আন্দোলন শুরু করেন শ্রমিকরা। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে আন্দোলনরত শ্রমিকদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে সরিয়ে দিলে যান চলাচল শুরু হয়। কিছু সময় পর গাজীপুর মহানগরের বাসন থানা এলাকায় ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে বিক্ষোভ শুরু করেন শ্রমিকরা। এ সময় তারা কাঠ, গাছের গুঁড়ি ও টায়ার জ্বালিয়ে মহাসড়ক অবরোধ করলে পুলিশ টিয়ারশেল ছুড়ে তাদের মহাসড়ক থেকে সরিয়ে দেয়। এতে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।

পরে দুপুরের খাবারের বিরতির পর থেকে শ্রমিকরা আবার আন্দোলন শুরু করেন। প্রথমে কোনাবাড়ী বিসিক এলাকার বিভিন্ন কারখানার শ্রমিকরা আন্দোলন শুরু করেন। এরপর মিছিল করতে করতে আঞ্চলিক গুরুত্বপূর্ণ সড়ক অবরোধ করেন তারা। এ সময় পুলিশে তাদের ধাওয়া দিয়ে সরিয়ে দিলে উত্তেজিত শ্রমিকরা ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে থাকেন। তুসকা গার্মেন্টস লিমিটেড নামে একটি কারখানার শ্রমিকরাও রাস্তায় নেমে আসেন। সন্ধ্যা পর্যন্ত থেমে থেমে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে চলে সংঘর্ষ। 

শিহাব খান/আরএআর