সাভারের বেশ কয়েকটি কারখানার শ্রমিক ঘোষণাকৃত চূড়ান্ত মজুরি ১২ হাজার ৫০০ টাকা প্রত্যাখ্যান করে কারখানা ত্যাগ করেছেন। পরে সড়কের উভয়পাশের বেশিরভাগ কারখানায় ছুটি ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। 

বৃহস্পতিবার (৯ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে টঙ্গী-আশুলিয়া-ইপিজেড সড়কের জামগড়ার ছয়তলা এলাকার এএম ডিজাইন লিমিটেড ও এনভয় কারখানার শ্রমিকরা কাজ বন্ধ করে কারখানা ত্যাগ করেন। পরে সড়কের উভয় পাশের কারখানাগুলো ছুটি ঘোষণা করা হয়। 

সকাল ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত টঙ্গী-আশুলিয়া-ইপিজেড সড়কের ইউনিক, শিমুলতলা, জামগড়া, ছয়তলা, নরসিংহপুর ও নিশ্চিন্তপুর এলাকা ঘুরে দেখা যায়, স্বাভাবিক নিয়মেই শ্রমিকরা সকালে কারখানায় প্রবেশ করেন। সাড়ে ৮টার দিকে দুই থেকে তিনটি কারখানার শ্রমিকরা বেতন বৃদ্ধির দাবিতে কাজ বন্ধ করে কারখানা ত্যাগ করেন। পরে একের পর এক কারখানা ছুটি ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। এদিকে বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে সড়কে র‍্যাব, ঢাকা জেলা পুলিশ ও বিজিবির পর্যাপ্ত উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। এসময় উপস্থিত পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশ্য এক শ্রমিককে বলতে শোনা যায়, আপনারাও গুলি করবেন না, আমরাও কোনো বিশৃঙ্খলা করব না, আমরা সবাই বাসায় যাচ্ছি।

এএম ডিজাইন লিমিটেড কারখানার অপারেটর লিটন ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা গার্মেন্টস শ্রমিক। আমরা দিন-রাত কাজ করি অথচ ঠিকমতো খাইতে পারি না। আমরা সন্তানদের লেখাপড়ার খরচ দিতে পারি না। প্রডাকশন টার্গেট পূরণ করতে যে পুষ্টি দরকার তার চাহিদা আমরা পূরণ করতে পারি না। নিত্যপণ্যের দাম ব্যাপক হারে বেড়ে গেছে। যে বেতন বাড়ানো হয়েছে আমরা সেই বেতন প্রত্যাখ্যান করছি। বেতন বৃদ্ধি না হওয়া পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব।

অপর শ্রমিক বলেন, আমরা দিন-রাত পরিশ্রম করি। আমাদের বেতন বাড়ানোর পরে বেতন হয়েছে সাড়ে ১২ হাজার টাকা। দ্রব্য মূলের ঊর্ধ্বগতির কাছে আমরা হেরে যাচ্ছি। সরকার যেই আসুক আমাদের কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু আমরা পেটের দায়ে এতো কষ্ট করি সাড়ে ১২ হাজার টাকায় আমাদের সংসার চলে না। রুম ভাড়া সাড়ে তিন হাজার, এক কেজি পেয়াজের দাম ১২০ টাকা, আমরা খাব কি?

এদিকে সড়কে মোটরসাইকেল মোহড়া দিতে দেখা গেছে আশুলিয়া থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম ও নেতাকর্মীদের। পাশাপাশি সতর্ক অবস্থানে রয়েছে র‍্যাব, ঢাকা জেলা পুলিশ ও বিজিবির বিপুল সংখ্যক সদস্য। কিছুক্ষণ পরপরই টহল দিতে দেখা গেছে বিজিবির একাধিক সাজোয়া যানের। তবে এখন পর্যন্ত কোনো শ্রমিক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেনি। পরিস্থিতি সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত স্বাভাবিক রয়েছে। 

আশুলিয়া শিল্প পুলিশ-০১ এর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সারোয়ার আলম বলেন, সকালে ৫/৬ টি কারখানার শ্রমিকরা বের হয়েছে। এরপর সড়কের পাশের কারখানাগুলো ছুটি ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। আমাদের পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। এছাড়া এখন পর্যন্ত পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।  

মাহিদুল মাহিদ/আরকে