ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলায় পাগলা কুকুরের কামড়ে শিশুসহ ৩৫ জন গুরুতর আহত হয়ে পড়েছে। তাদের অনেকেই স্থানীয় এবং ভোলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। গত বৃহস্পতি ও শুক্রবার উপজেলার বোরহানগঞ্জ বাজার, পক্ষিয়া ইউনিয়ন, কাচিয়া ও টগবী ইউনিয়নে বিচ্ছিন্নভাবে এসব ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় কুকুর আতঙ্কে রয়েছে এলাকাবাসী।  

এর মধ্যে পক্ষিয়া ইউনিয়নে ১০-১২ জন শিশুকে কুকুর কামড়ে তাদের শরীর ক্ষত-বিক্ষত করে দিয়েছে। শিশুদের মধ্যে অনেকেই বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

বোরহানউদ্দিন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, স্থানীয় ও বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, পক্ষিয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন ওয়ার্ড, টগবী ও কাচিয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে একের পর এক মানুষকে পাগলা কুকুর কামড় দেওয়ায় চারদিকে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। অতি প্রয়োজনেও কুকুরের ভয়ে বাড়ি থেকে কেউ বের হতে পারছে না।

বোরহানউদ্দিন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার মাহির ফয়সাল জানান, গত বৃহস্পতিবার থেকে শনিবার পর্যন্ত ২০-২৫ জন কুকুরের কামড়ের রোগী চিকিৎসা নিতে এসেছে হাসপাতালে। এদের মধ্য বেশিরভাগই ছিল শিশু। 

তিনি জানান, কুকুরের কামড়ে আহতদের রেবিক্স ডিসি ইনজেকশন দিতে হয় এবং এক মাসে মোট পাঁচ ডোজ ইনজেকশন দিতে হবে। তিনি বলেন, ওই সব এলাকার পাগলা কুকুরগুলোকে চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করলে হয়তো এর প্রতিরোধ সম্ভব হবে। 

স্থানীয় বোরহানগঞ্জ বাজারের ব্যবসায়ী মাহাবুব আলম জানান, এলাকায় দলবদ্ধ হয়ে কুকুর দৌড়াদৌড়ি করছে। চারপাশে কুকুরের উৎপাত বেড়েছে। শিশুসহ ১২-১৩ জনকে কামড়ে আহত করেছে। কারও কারও অবস্থা খুবই খারাপ।

এদিকে পক্ষিয়া ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ৫ বছরের এক শিশুকে কুকুর কামড়ে মারাত্মকভাবে জখম করেছে। তাকে প্রথমে বোরহানউদ্দিন ও ভোলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসার পরে অবস্থার অবনতি হলে রোববার বরিশালে স্থানান্তর করা হয়েছে।

বোরহানউদ্দিন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রায়হান-উজ্জামান জানান, কুকুরের কামড়ে শিশুসহ অনেকেই আহত হয়েছে। আমি জেলা প্রশাসক মহোদয়সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করেছি।

এ বিষয়ে ভোলার জেলা প্রশাসক আরিফুজ্জামান বলেন, বোরহানউদ্দিনে কুকুরের কামড়ে শিশুসহ অনেকেই আহত হয়েছেন। বিষয়টি শুনেই ভোলার সিভিল সার্জন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, পৌরসভার মেয়রসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে কুকুর নিধনের আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছি এবং আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসায় যাতে কোনো সমস্যা না হয় সেদিকে তদারকি করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য বলা হয়েছে।

এমএএস