মাটিচাপায় শেষ হয়ে গেল প্রবাসী মিলনের ভাগ্য বদলের স্বপ্ন
ভাগ্য বদলের স্বপ্ন নিয়ে মালয়েশিয়া পারি জমিয়েছিলেন পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার মনিরুল ইসলাম মিলন (৩১)। কিন্তু প্রবাসে মাটি চাপা পড়ে শেষ হয়ে গেছে তার স্বপ্ন। অসহায় হয়ে পড়েছে তার পরিবারটিও।
বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) মালয়েশিয়ার মাচাং এলাকায় কাম্পুং মাকাতে সড়ক নির্মাণ প্রকল্পে কাজ করতে গিয়ে মাটিচাপা পড়ে মারা গেছেন তিনি। তার সঙ্গে আরও দুই বাংলাদেশি শ্রমিকেরও মৃত্যু হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে মালয়েশিয়ার মাচাং এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। বিকেল ৪টার দিকে স্থানীয় পুলিশ ও দমকল বাহিনীর কর্মীরা মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মাচাং হাসপাতালে পাঠায়।
বিজ্ঞাপন
মৃত প্রবাসী মনিরুল ইসলাম মিলন ভাঙ্গুড়া উপজেলার অষ্টমনিষা ইউনিয়নের ঝবঝবিয়া গ্রামের কৃষক জমিন উদ্দিনের ছেলে। তার স্ত্রী ও ৫ বছরের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে।
স্থানীয় এলাকাবাসী ও নিহতের পরিবার সূত্র জানায়, দরিদ্র পরিবারের সন্তান মিলন দেশে বেশ কয়েকটি কোম্পানিতে চাকরি করেছেন। কিন্তু কোনো কাজেই তিনি সুবিধা করতে পরছিলেন না। তাই স্ত্রী-সন্তানের ভবিষ্যতের কথা ভেবে সিদ্ধান্ত নেন বিদেশে যাওয়ার। গত ৯ মাস আগে ভাগ্য বদলের আশায় মালয়েশিয়ায় পারি জমান মিলন। কিন্তু সেখানে গিয়েও কথা মতো কাজ না পেয়ে হতাশ হন তিনি।
পরে সেখান থেকে অন্যত্র পালিয়ে গিয়ে একটি প্রতিষ্ঠানে নির্মাণ শ্রমিকের কাজ নেন। ঘটনার দিন বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) সড়ক নির্মাণ প্রকল্পে ১১ ফুট মাটির নিচে পাইলিংয়ের কাজ করছিলেন কয়েকজন শ্রমিক। হঠাৎ মাটি চাপা পড়ে মিলনসহ তিন বাংলাদেশি মারা যান।
নিহত মিলনের স্ত্রী সনজুয়ারা খাতুন বলেন, আমার স্বামী ধারদেনা করে ৫ লাখ টাকা খরচ করে মালয়েশিয়ায় গিয়েছিল। এখন পর্যন্ত বাড়িতে তিনি একটি টাকাও পাঠাতে পারেননি। তাই ধারদেনাও শোধ করা যায়নি। এর মধ্যে সে আমাদের ছেড়ে চলে গেল। এখন ছোট শিশু সন্তান নিয়ে কিভাবে কী করব কিছুই বুঝতে পারছি না।
উপজেলার অষ্টমনিষা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সুলতানা জাহান বকুল এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। পরিবারটির পাশে দাঁড়াতে প্রশাসনসহ সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।
ভাঙ্গুড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ নাহিদ হাসান খান বলেন, আমরা খবর পেয়েছি। খোঁজখবর নিয়েছি। নিহত মনিরুল ইসলাম মিলনের মরদেহ দেশে আনতে সব ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
রাকিব হাসনাত/আরকে