নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান বলেছেন, বিএনপি কোনো গণতান্ত্রিক দল নয়। ওরা প্রধান বিচারপতির বাড়িতে হামলা করল, কয়েকজন পুলিশকে একা পেয়ে মারল। একজন পুলিশ সদস্যকে মারতে মারতে মেরেই ফেলল। মৃত সেই মানুষটিকে আবারও চাপাতি দিয়ে কোপাল।

তিনি বলেন, কী দৈন্যদশা ওদের, কী অসহায় অবস্থা বিএনপির যে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রিজভী সাহেব নারায়ণগঞ্জে এসে ৭-১০ জন লোক নিয়ে মিছিল করেন, একটা টায়ার জ্বালান। রাস্তার পাগলও রিজভীর জায়গায় থাকলে ৭-১০ জনের বেশি মানুষ হতো। 

বুধবার (১ নভেম্বর) বিকেলে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার নম পার্কে ৪ নভেম্বর আওয়ামী লীগের মহাসমাবেশ উপলক্ষ্যে আয়োজিত প্রস্তুতি সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে শামীম ওসমান এসব কথা বলেন। 

অবরোধের প্রথম দিনে নারায়ণগঞ্জে সহিংসতার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আড়াইহাজারে আহত পুলিশ সদস্যকে ভ্যানে ওঠানোর পর আবার মারা হলো। ক্ষমতায় না এসেই যারা পুলিশ, সাংবাদিকদের পেটাতে পারে, অ্যাম্বুলেন্সে আগুন দিতে পারে, ক্ষমতায় এলে তারা কী করবে? আমরা ধৈর্য ধরেছি। জননেত্রী শেখ হাসিনাকে এবার বলেছিলাম- বিএনপির অফিসের (নয়াপল্টন) সামনে এবার নারায়ণগঞ্জ থেকে আমরা জমায়েত হই। তিনি বললেন, আমি জানি তোমরা পারবে, কিন্তু দরকার নেই৷ যতদিন বেঁচে আছি নেত্রীর আদেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করব। নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপারকে এবার অনুরোধ করেছিলাম- বিএনপির নেতাকর্মীদের যেন ধরা না হয়। অনেক অনুরোধের পরে তিনি রাজিও হয়েছিলেন, কিন্তু আড়াইহাজারে পুলিশ সদস্যকে কুপিয়ে জখমের পর তিনি স্থির থাকতে পারেননি। পুলিশ প্রশাসন অসীম ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছে। 

বিএনপি নাকে খত দিয়ে নির্বাচনে আসবে উল্লেখ করে শামীম ওসমান বলেন, বিএনপির চরিত্র মানুষের কাছে উন্মোচিত হয়ে গেছে। ইউরোপের দেশগুলো এখনই তাদেরকে বলছে ‘শর্তহীন আলোচনায় আসুন’। ১৩, ১৪, ১৫ সালে বিএনপি আগুন দিয়ে মানুষ হত্যা করল। ২০০১ সালের নির্বাচনের এই এলাকার সাবেক এমপি (গিয়াস উদ্দিন) আমাদের ১৭ জন মানুষকে হত্যা করিয়েছেন। তৈমুরের (সাবেক বিএনপি নেতা, বর্তমানে বিএনএফের মহাসচিব) ভাই সাব্বিরকে হত্যা করিয়েছে। আমাদের হাজার হাজার নেতাকর্মী ঘরে থাকতে পারেননি, অনেককে দেশ ছাড়তে হয়েছে। যুবলীগের সুইটকে জেল থেকে বের করে মেরে ফেলা হয়েছে। কফিল ভাই, সুন্দর আলি ভাইকে মেরে ফেলা হলো। আমাদের বাড়ির চেয়ারে প্রসাব করা হয়েছে, বায়তুল আমান পুড়িয়ে দেওয়া হলো। প্রায় ১৫ বছর আমরা ক্ষমতায়। একবার আওয়াজ উঠলে বিএনপি নেতাকর্মীদের বাড়িতে ইট থাকবে না। 

এ সময় আগামী ৮ নভেম্বর থেকে নির্বাচনী গণসংযোগে নামার ঘোষণা দেন তিনবারের এই সংসদ সদস্য। 

প্রস্তুতি সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবু হাসনাত মো. শহিদ বাদল, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট খোকন সাহা, নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বাবু চন্দন শীল, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবুর রহমান, সোনারগাঁ থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কায়সার হাসনাত, নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জাকিরুল আলম, শহর যুবলীগের সভাপতি শাহাদাত হোসেন সাজনু, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সভাপতি জুয়েল হোসেন প্রমুখ। 

আরএআর