আশুলিয়ায় শ্রমিক অসন্তোষ, সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ
সাভারের আশুলিয়ায় বেতন বৃদ্ধির দাবিতে সোমবার (৩০ অক্টোবর) সকাল থেকে ফের সড়ক অবরোধ করেছে শ্রমিকরা। দফায় দফায় আব্দুল্লাহপুর-বাইপাইল সড়কে বিক্ষোভ মিছিল করছেন বিভিন্ন পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা। এ ঘটনায় কয়েক দফায় টিয়ারশেল নিক্ষেপ করেছে পুলিশ।
সোমবার (৩০ অক্টোবর) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত দফায় দফায় বাইপাইল-আবদুল্লাহপুর মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন প্রায় ৮ থেকে ১০ কারখানার শ্রমিক। এ সময় আন্দোলনে সমর্থন না দেওয়ার হা-মীম গ্রুপের নেক্সট কালেকশনস লিমিটেড-১ এ প্রবেশ করে কর্মকর্তাদের ওপর হামলা করে আন্দোলনরত শ্রমিকরা।
বিজ্ঞাপন
এ ঘটনায় ওই কারখানার ২০ থেকে ২২ জন শ্রমিক ও কর্মকর্তার আহতের খবর পাওয়া গেছে।
শ্রমিকরা জানান, সকাল থেকে আশুলিয়ার জামগড়ার বিভিন্ন পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা এক সঙ্গে জড়ো হতে থাকে। পরে ২৩ হাজার টাকা বেতনের দাবিতে বিভিন্ন কারখানার প্রায় ৩-৪ হাজার শ্রমিক আব্দুল্লাহপুর-বাইপাইল সড়কে অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করে। এ সময় তাদের ছত্রভঙ্গ করতে বেশ কয়েক রাউন্ড টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ করে পুলিশ। পরে শ্রমিকরা সড়ক থেকে সরে যায়।
সকাল ১০ টার দিকে আবারও শ্রমিকরা সড়কে নেমে বিক্ষোভ করতে থাকেন। এ সময় পুলিশ আবারও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে তাদের সরিয়ে দেয়। এরপর সকাল ১১টার দিকে আবারও বিক্ষোভ করার চেষ্টা করলে পুলিশ জলকামান ব্যবহার ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে।
এর আগে সকাল ১০টার দিকে নরসিংহপুর এলাকার হা-মীম গ্রুপের নেক্সট কালেকশনস লিমিটেড-১ এর ভেতরে প্রবেশ করে আন্দোলনরত শ্রমিকরা।
আশুলিয়া নারী ও শিশু হাসপাতালের কর্মকর্তা হারুন-অর রশিদ বলেন, আমাদের হাসপাতালে আহত অবস্থায় নেক্সট কালেকশনস লিমিটেডের ২০ থেকে ২২ জন কর্মকর্তা আসেন। তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এদের মধ্যে গুরুতর আহত ৪ থেকে ৫ জনকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
নেক্সট কালেকশনস লিমিটেড-১ এর নিরাপত্তারক্ষী নিতাই দেবনাথ বলেন, সকালবেলা হঠাৎ করে শতাধিক লোকজন কারখানার প্রধান ফটক ভাঙচুর করে আমাদের মারধর করে। এরপর কারখানার ভেতরে প্রবেশ করে কারখানার কর্মকর্তা ও শ্রমিকদের মারধর করে।
মারধরে আহত নেক্সট কালেকশনস লিমিটেড-১ এর দ্বিতীয় তলার কোয়ালিটি ইনচার্জ তাইজির উদ্দিন বলেন, আমরা দুই তলায় কাজ করছিলাম। তারা হঠাৎ করে আমাদের কারখানায় প্রবেশ করে মারধর শুরু করে। কি কারণে মারধর করেছে আমরা জানি না।
শিল্প পুলিশ-১ এর এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, সকাল থেকে জামগড়া এলাকায় শিল্প পুলিশ ও আশুলিয়ায় থাকা পুলিশের প্রায় ২৮/৩০ টিম কাজ করছেন। আমরা শ্রমিকদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছি। তবে কত রাউন্ড টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ করা হয়েছে এই মুহূর্তে কিছু বলা সম্ভব নয়।
আশুলিয়া থানা পুলিশের পরিদর্শক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম কামরুজ্জামান বলেন, আমরা শ্রমিকদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে সরিয়ে দিয়েছি। সড়কে যানচলাচল স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ কাজ করছে পুলিশ। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।
এদিকে একই দাবিতে হেমায়েতপুরে বিক্ষোভ করেছে পোশাক শ্রমিকরা। সকাল সাড়ে ৭টার দিকে সাভারের হেমায়েতপুর পদ্মার মোড় এলাকার সড়কে আগুন জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন তারা। শ্রমিকরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট পাটকেল নিক্ষেপ করলে ঘণ্টাব্যাপী পুলিশের সঙ্গে শ্রমিকদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এসময় সাভারেও পুলিশ কয়েক রাউন্ড টিয়ারগ্যাস গ্যাস ছুড়ে শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
মাহিদুল মাহিদ/আরকে