ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে যান চলাচল শুরু, সতর্ক পুলিশ
গাজীপুর মহানগরের ভোগড়া বাইপাস এলাকায় বেতন বাড়ানোর দাবিতে সোমবার (৩০ অক্টোবর) ৬ষ্ঠ দিনের মতো আন্দোলনে নেমেছেন শ্রমিকরা। এসময় শ্রমিকদের সঙ্গে সংঘর্ষে পুলিশ লাঠিচার্জ, টিয়ারসেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। এতে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হয়।
সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে শ্রমিকরা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক ছেড়ে আশপাশের অলিগলিতে অবস্থান নেয়। এরপর পৌনে ১টার দিকে মহাসড়কে যান চলাচল শুরু হয়। শ্রমিক আন্দোলন ঠেকাতে সতর্ক অবস্থানে থাকতে দেখা গেছে পুলিশ সদস্যদের। জানা গেছে, এর আগে ভোগড়া বাইপাস কলম্বিয়া এলাকায় পুলিশের একটি পিকআপ ভ্যানে আগুন দেয় শ্রমিকেরা।
বিজ্ঞাপন
বেতন বাড়ানোর দাবিতে টানা ৬ষ্ঠ দিনের মতো সোমবার গাজীপুরে আন্দোলনে নামে শ্রমিকরা। বর্তমানে যাদের বেতন ৭ হাজার থেকে ৮ হাজার টাকা তাদের বেতন ২৩ হাজার টাকা করার দাবি জানিয়ে সকাল ৯টা থেকে ভোগড়া বাইপাসের আশপাশের এলাকার বিভিন্ন কারখানার শ্রমিকরা আন্দোলন শুরু করেন। এসময় তারা কয়েকটি কারখানায় ভাঙচুর চালিয়ে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের মিছিল বের করলে পুলিশ লাঠিচার্জ ও টিয়ারসেল নিক্ষেপ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এরপর একদল শ্রমিক মহাসড়কে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করে। এসময় উত্তেজিত শ্রমিকরা পুলিশের একটি পিকআপে আগুন ধরিয়ে দেন।
সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে ভোগড়া বাইপাস অংশে সব যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল। এতে মহাসড়কের কয়েক কিলোমিটার এলাকায় যানজট তৈরি হলে ভোগান্তিতে পড়েন মহাসড়কে চলাচলকারী যাত্রীরা। পুলিশ তাদের মহাসড়ক থেকে সরিয়ে দিলে আশপাশের অলিগলিতে অবস্থান নেন শ্রমিকরা। বেলা সাড়ে ১২টার দিকে শ্রমিকরা মহাসড়কে ছেড়ে গেলে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে যান চলাচল কিছুটা স্বাভাবিক হয়। এখন মহাসড়ক দিয়ে শঙ্কা ও আতঙ্ক নিয়ে ধীরগতিতে চলছে যানবাহন।
আন্দোলনরত শ্রমিক মো. আহসান বলেন, বর্তমান বাজারে সব ধরনের দ্রব্যমূল্যের দাম বেড়ে গেছে, দ্রব্যমূল্যের দাম বাড়লেও আমাদের বেতন বাড়ানো হয় না। আমাদের মাসে ৮ হাজার টাকার মতো বেতন দেওয়া হয়। সন্তানসহ তিনজনের সংসারে সাড়ে তিন থেকে চার হাজার টাকায় ঘর ভাড়া নিয়ে থাকতে হয়। বাকি চার হাজার টাকায় মাসের খরচ সন্তানের স্কুলের বেতন পরিশোধ করে সংসার চালানো যায় না। মাস শেষে গ্রামে মায়ের হাতে টাকাও পাঠানো যায় না। তাই আমাদের বেতন সর্বনিন ২৩ হাজার টাকা করার দাবি জানিয়েছি।
ময়মনসিংহগামী ইসলাম পরিবহনের চালক সেলিম মিয়া বলেন, সকালে মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকে যাত্রী তুলে ময়মনসিংহের উদ্দেশ্যে রওনা দেই। বোর্ড বাজার পার হওয়ার পরই শ্রমিকরা মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ করে বিক্ষোভ করতে থাকে। পুরো গাড়ি ভর্তি যাত্রীরা আতঙ্কিত হয়ে অনেকেই বাস থেকে নেমে দাঁড়ায়। আবার অনেক যাত্রী গ্লাস আটকে দিয়ে সিটের নিচে মুখ লুকিয়ে বসে থাকে। হঠাৎ পুলিশ টিয়ারসেল ছোড়া শুরু করলে পরিস্থিতি আরও ভয়ংকর হয়ে ওঠে। বিক্ষোভে মুখে পড়লে কি অবস্থায় পড়তে হয় সেই চিন্তায় আছি।
গাজীপুর শিল্প পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মোশারফ জানান, ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়কে এখন যানবাহন চলাচল কিছুটা স্বাভাবিক হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য আমরা সাধ্যমতো চেষ্টা করছি।
শিহাব খান/আরকে