কিশোরগঞ্জের ভৈরবে ট্রেন দুর্ঘটনায় নিহত আরও একজনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে। নিহত ব্যক্তির নাম জোবায়ের হোসেন (২৬)। তিনি কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর উপজেলার পৈলনপুর গ্রামের আক্তার মিয়ার ছেলে।

শুক্রবার (২৭ অক্টোবর) ভৈরব উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ সাদিকুর রহমান সবুজ বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, জোবায়ের হোসেন ঢাকার একটি মাদরাসায় শিক্ষকতা করতেন। ছুটিতে কুলিয়ারচরে নিজ বাড়িতে এসেছিলেন। ছুটি শেষ ট্রেনে করে ঢাকায় ফিরছিলেন তিনি।

উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ট্রেন দুর্ঘটনায় জোবায়ের হোসেন গুরুতর আহত হলে তাকে চিকিৎসার জন্য ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু দুর্ঘটনার পরদিন তিনি মারা যান। এই বিষয়টি কেউ প্রশাসনকে জানায়নি। তারা গোপনে দাফন করেন। পরবর্তীতে প্রশাসনের কাছে মৃত্যুর তথ্যটি আসে।

এদিকে ট্রেন দুর্ঘটনায় শফিকুল ইসলাম (৩২) নামের আরও একজন নিহত হন। তবে তার তথ্য প্রশাসনের তালিকায় আসেনি বলে জানা গেছে। নিহত ইসলাম শফিকুল কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলার জয়কা ইউনিয়নের পানাহার গ্রামের মৃত জালাল উদ্দিনের ছেলে। তিনি পেশায় একজন ভাঙারি ব্যবসায়ী ছিলেন।

নিহত শফিকুলের ছোট ভাই সাইফুল ইসলাম জানান, গুরুতর আহতাবস্থায় ভৈরব হাসপাতাল থেকে ময়মনসিংহে নেওয়ার পথে তার ভাই মারা যান। তারা বিষয়টি বুঝতে না পেরে প্রশাসনকে না জানিয়েই মরদেহ বাসায় নিয়ে যান। দুর্ঘটনায় অন্য নিহত ব্যক্তিরা সরকারের পক্ষ থেকে সহযোগিতা পেলেও তারা পাননি।

তিনি আরও জানান, তার ভাইয়ের তিনটি ছোট ছোট শিশুসন্তান রয়েছে। এই বিষয়ে সরকার সহযোগিতা করলে তাদের অনেক উপকার হবে।

ভৈরব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ সাদিকুর রহমান সবুজ বলেন, এই পর্যন্ত ট্রেন দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা ছিল ১৮ জন। জোবায়ের হোসেনের মৃত্যুর তথ্যটি আমাদের তালিকায় ছিল না। এখন মোট মৃতের সংখ্যা ১৯ জন। তবে ট্রেন দুর্ঘটনায় করিমগঞ্জের একজনের মারা যাওয়ার খবর পেয়েছি। তার নাম আমাদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়নি। আমরা খোঁজ নিয়ে তার নাম অন্তর্ভুক্ত করবো।

উল্লেখ্য, সোমবার (২৩ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে ভৈরব রেলস্টেশন থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়া আন্তঃনগর এগারসিন্দুর এক্সপ্রেস ট্রেনে বিপরীত দিক থেকে আসা মালবাহী ট্রেনের ধাক্কায় ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় মালবাহী ট্রেনের চালক জাহাঙ্গীর আলম, সহকারী চালক আতিকুর রহমান ও পরিচালক (গার্ড) মো. আলমগীরকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এছাড়া নিহত এক ব্যক্তির পরিবারের পক্ষ থেকে এই তিনজনকে আসামি করে রেলওয়ে থানায় মামলা করা হয়েছে। মামলায় ট্রেন পরিচালনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদেরও অভিযুক্ত করা হয়েছে। মামলার পর রেলওয়ে পুলিশ তদন্তকাজ শুরু করেছে বলে জানিয়েছে।

মোহাম্মদ এনামুল হক হৃদয়/এমজেইউ