ঘূর্ণিঝড় হামুনের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা নোয়াখালীতে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) সকাল থেকেই এই বৃষ্টি শুরু হয়। সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বৃষ্টি ও বাতাসের গতি আরও বাড়বে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এদিকে বৃষ্টি ও বৈরী আবহাওয়ার ফলে বিচ্ছিন্ন দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার সঙ্গে নোয়াখালীর নৌ যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। 

নৌ চলাচল বন্ধ থাকায় নোয়াখালীর অন্য কোথাও থেকে লোকজন হাতিয়ায় আসতে পারছেন না এবং হাতিয়া থেকে কেউ দ্বীপের নোয়াখালীতে যেতে পারছেন না। এ পরিস্থিতিতে দুর্ভোগে পড়েছেন অপেক্ষমাণ যাত্রীরা।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত নিম্নচাপটি আরও সামান্য উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হয়েছে। গভীর নিম্নচাপটি কক্সবাজার সমুদ্র বন্দর থেকে ৪১০ কিলোমিটার পশ্চিম-দক্ষিণ পশ্চিমে রয়েছে।

ঘূর্ণিঝড়টি আগামীকাল ২৫ অক্টোবর সকাল থেকে দুপুরের মধ্যে ভোলার নিকট দিয়ে বরিশাল-চট্রগ্রাম উপকূলে ঘূর্ণিঝড় হিসেবে অতিক্রম হতে পারে। যার ফলে নোয়াখালী জেলাকে সাত নম্বর সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

হাতিয়ার নলচিরা ঘাটের ইজারাদার মো. ফাহিম ঢাকা পোস্টকে বলেন, হাতিয়া-বয়ারচর চেয়ারম্যান ঘাট সি-ট্রাক, ট্রলার চলাচল বন্ধ রয়েছে। 

হাতিয়ার বুড়িরচর ইউনিয়নের বাসিন্দা মো. সাইফুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, সকাল থেকেই থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। দোকানপাটে মানুষ নেই। বেশিরভাগ মানুষ ঘরে বসে আছে। কাজে যেতে পারছে না। সাত নম্বর সংকেত দেওয়া হলেও মানুষের মাঝে সচেতনতা নেই।

জেলা আবহাওয়া অধিদপ্তরের কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে সকাল থেকে সূর্যের আলো দেখা যায়নি। সকাল থেকে হালকা ও মাঝারি বৃষ্টি হচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় হামুনের ফলে উপকূলীয় এলাকা নোয়াখালীকে ৭ নম্বর সংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। আবহাওয়া পরিস্থিতির পরিবর্তন হলে এই সংকেত আরও বাড়তে পারে।

হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুরাইয়া আক্তার লাকী ঢাকা পোস্টকে বলেন, হামুন মোকাবিলায় হাতিয়াতে ২৪২টি সাইক্লোন সেল্টার ও ৩০টি উঁচু স্থাপনা প্রস্তুত রাখা হয়েছে । এছাড়া মানুষের জানমাল রক্ষায় গতকাল সোমবার থেকেই  হাতিয়া-বয়ারচর চেয়ারম্যান ঘাট সি-ট্রাক চলাচল বন্ধ রয়েছে। সব নৌযানকে নিরাপদে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দেওয়ান মাহবুবুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, ঘূর্ণিঝড় হামুন নিয়ে উপকূলীয় সব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের প্রাথমিকভাবে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের সংকেত ও মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এছাড়াও বৈরী আবহাওয়ার কারণে  দুর্ঘটনা এড়াতে দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার সঙ্গে জেলা শহর নোয়াখালীর সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে নৌ চলাচল শুরু হবে।

হাসিব আল আমিন/আরকে