বিচারপতিকে নিয়ে কটূক্তির মামলায় আপিল বিভাগের দেওয়া এক মাসের সাজা ভোগ করতে দিনাজপুর পৌরসভার মেয়র ও রংপুর বিভাগীয় বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম আদালতে আত্মসমর্পণ করেছেন। তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।

বুধবার (১৮ অক্টোবর) দুপুরে দিনাজপুর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জুলফিকার উল্লাহর আদালতে আত্মসমর্পণ করেন তিনি। এর আগে তিনি শহরের জেল রোডের বিএনপির দলীয় কার্যালয় থেকে দিনাজপুর পৌরসভায় আসেন। পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলে আদালতে যান।

দিনাজপুর পৌরসভার মেয়র সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম আদালতে আত্মসমর্পণের পূর্বে বলেন, সরকার বিএনপির নেতাকর্মীদের বিভিন্নভাবে দমানোর চেষ্টা করছে। আমার একটি কথায় উচ্চ আদালত আমাকে সাজা দিয়েছে। আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে আদালতে আত্মসমর্পণ করছি।

দিনাজপুর কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক এ কে এম লিয়াকত আলী জানান, উচ্চ আদালতের দেওয়া এক মাসের সাজাভোগ করার জন্য আজ দুপুরে পৌর মেয়র সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। এর আগে জরিমানার এক লাখ টাকা দেন। বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। পরে তাকে পুলিশি পাহারায় কারাগারে নেওয়া হয়।

উল্লেখ্য, গত ৩ আগস্ট দিনাজপুরে বিএনপির পূর্বঘোষিত কর্মসূচি পালনকালে পৌর মেয়র সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম তার বক্তব্যে দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মামলায় হাইকোর্টে রায় দেওয়া বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিমকে নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করেন এবং বিচারের রায় নিয়েও অবমাননাকর কথা বলেন।

মেয়রের ওই বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। বিষয়টি নজরে আসায় তার বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার আবেদন করেন সুপ্রিম কোর্টের চার আইনজীবী। গত ২৪ আগস্ট তলব আদেশে হাজির হয়ে বিচারপতিকে নিয়ে অশালীন মন্তব্য করার ঘটনায় আপিল বিভাগে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেন পৌর মেয়র সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম। পরে ১২ অক্টোবর মেয়রের উপস্থিতিতে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে ৫ সদস্যের বেঞ্চ শুনানি করে ১ মাসের কারাদণ্ড ও ১ লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ১ সপ্তাহের কারাদণ্ডের আদেশ দেন। একই সঙ্গে ৭ দিনের মধ্যে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণের আদেশ দেন।

ইমরান আলী সোহাগ/আরএআর