চুরি করে পালিয়ে যাওয়ার সময় চোরকে ধরে ফেলে শাওন ও শামীম। এতে ক্ষিপ্ত হয় সাইজউদ্দিনের ঘরে চুরি করতে আসে জাহাঙ্গীর দেওয়ান। জাহাঙ্গীর প্রতিবেশী হওয়ায় বিষয়টি নিয়ে আইন আদালত করেননি সাইজউদ্দিন। ওই ঘটনার কয়েক মাস পেরিয়ে গেলেও জাহাঙ্গীর দেওয়ান শাওন ও শামীমের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে সুযোগ খুঁজতে থাকে। সুযোগ পেয়ে শাওনকে কুপিয়ে মারাত্মক আহত করার অভিযোগ উঠেছে জাহাঙ্গীর দেওয়ানের বিরুদ্ধে। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় চিকিৎসক শাওনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠিয়েছেন। 

শনিবার (৭ অক্টোবর) দুপুরে শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার সুরেশ্বর দরবার শরীফের কাছে এ ঘটনা ঘটেছে। আহত শাওন পাইক (১৯) একই উপজেলার ঘরিসার ইউনিয়নের পূর্ব হালইসার গ্রামের নুরুল হক পাইকের ছেলে।

ভুক্তভোগীর স্বজন ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, হালইসার গ্রামের সাইজউদ্দিন পাইক নামে এক ব্যক্তির ঘরে কিছুদিন আগে চুরির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় তারই প্রতিবেশী আলী মিয়া দেওয়ানের ছেলে জাহাঙ্গীর দেওয়ানকে ধরে মুরব্বিদের হাতে তুলে দেয় সাইজউদ্দিনের ভাই নূরুল হক পাইকের দুই ছেলে শাওন পাইক ও শামীম পাইক। এরপর থেকেই শাওন ও শামীম পাইকের সঙ্গে বিরোধ তৈরি হয় জাহাঙ্গীর দেওয়ানের। এ ঘটনার জের ধরে শনিবার দুপুরে শাওনকে সুরেশ্বর এলাকায় একা পেয়ে ছুড়িকাঘাতে গুরুতর আহত করে জাহাঙ্গীর দেওয়ান, শাহালম দেওয়ান, আলমগীর দেওয়ান ও আলম দেওয়ান। 

এসময় শাওনের ডাক চিৎকার স্থানীয়রা এগিয়ে এলে পালিয়ে যায় হামলাকারীরা। পরে তাকে উদ্ধার করে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। 

আহত শাওন পাইকের ভাই শামীম পাইক ঢাকা পোস্টকে বলেন, জাহাঙ্গীর আমার চাচার ঘরে চুরি করে পালানোর সময় আমরা দুই ভাই মিলে ধাওয়া করে ধরে মুরব্বিদের হাতে তুলে দেই। এরপর থেকে জাহাঙ্গীর দেওয়ান ও তার ভাইয়েরা আমাদের মারার জন্য সুযোগ খুঁজছিল। দুপুরে আমার ভাইকে একা পেয়ে ছুরি দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। আমার ভাইয়ের অবস্থা বেশি ভালো না। আমরা এ ঘটনায় অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক বিচারের দাবি করছি।

শাওনের মা ফাহিমা বেগম ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমার বাবাকে জাহাঙ্গীর কুপিয়েছে। আমার বাবার শরীর দিয়ে রক্ত বের হচ্ছে। শরীয়তপুরের চিকিৎসক থামাতে পারছে না। ঢাকায় পাঠিয়ে দিয়েছে। আমার জন্য যেন বেঁচে ফিরে, সেই দোয়া করবেন। জাহাঙ্গীরের বিচার চাই আমি।

বিষয়টি জানার জন্য জাহাঙ্গীর দেওয়ানের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে কর্মরত চিকিৎসক শরীফ উর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, দুপুরে শাওন পাইক নামের একটি ছেলেকে আহত অবস্থায় নিয়ে আসা হয়েছিল। তার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় জখমের চিহ্ন ছিল। প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে তার। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। 

নড়িয়া থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) আবির হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি। প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি পূর্ব শত্রুতার জেরে এই হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ ব্যাপারে ভুক্তভোগীর পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সাইফুল ইসলাম সাইফ রুদাদ/এমএএস