তলে তলে সমঝোতার সুযোগ নেই : মির্জা ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, তলে তলে সমঝোতার সুযোগ নেই, এবার আর কেউ আপস করবে না। ভালোয় ভালোয় নির্দলীয় সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করুন। আমরা বিএনপির হাতে ক্ষমতা চাই না, জনগণের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করুন। কথা না শুনলে ফয়সালা হবে রাজপথে।
বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে ফেনীর মহিপালে সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে বিএনপির কুমিল্লা থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত তারুণ্যের রোডমার্চের পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বিজ্ঞাপন
মির্জা ফখরুল বলেন, খালেদা জিয়া আজ চিকিৎসার সুযোগ পাচ্ছেন না। চিকিৎসক বিদেশে নিতে বললেও এ ফ্যাসিস্ট সরকার বিদেশ যাওয়ার অনুমতি না দিয়ে বিনা চিকিৎসায় তাকে হত্যা করতে চায়। কারণ, খালেদা জিয়াকে হত্যা করলে তাদের রাস্তা পরিষ্কার।
প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে ক্ষোভ প্রকাশ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, লন্ডনে বসে তিনি (শেখ হাসিনা) যে বক্তব্য দিয়েছেন, কোনো মানুষ এমন কথা বলতে পারে না। খালেদা জিয়া শুধু বিএনপির নেত্রী নন, এশিয়ার প্রথম মুসলিম নেত্রী। তিনি এদেশে সংসদীয় গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনেছিলেন। মানুষের উপকার করেছেন। সেই নেত্রীকে আজ মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়েছেন। এসব আমরা মেনে নিতে পারি না।
বর্তমান সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, এই সরকার মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে। সামনে আবার একইভাবে নির্বাচন করতে চায়। এবার আর শেখ হাসিনার অধীনে কোনো নির্বাচন নয়। সবাইকে এই প্রতিজ্ঞা করতে হবে। আমাদের এক দফা এক দাবি, পদত্যাগ করতে হবে। শেখ হাসিনা থাকলে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না। এবার যেতে হবে। এখনও সময় আছে। আমার ভোট আমি দেব, যাকে খুশি তাকে দেব। কিন্তু তাদের কথা, আমার ভোট আমি দেব, তোমার ভোটও আমি দেব। কারণ, তারা জানে নির্বাচন হলে ১০ শতাংশ ভোটও পাবে না।
তিনি বলেন, আজকেও ওবায়দুল কাদেরের বাড়ির সামনে বিএনপি নেতাকর্মীদের গাড়ি ভাঙচুর করেছে। এই সন্ত্রাস করে তারা ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায়। এ আন্দোলনে ৬৭৫ জন গুম হয়েছে, ২৮ জন প্রাণ হারিয়েছে। তাদের পরিবার এখনো ফেরার অপেক্ষায় বসে আছে।
পথসভায় প্রধান বক্তা বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আমরা এতদিন অহিংস আন্দোলন করেছি। কিন্তু এখন যেটা দেখতে পাচ্ছি তারা খালেদা জিয়াকে বন্দি করে নেতাকর্মীদের ওপর হামলা-মামলা করছে। আমরা এখনো সহিংসতার দিকে যাইনি। প্রতিবাদ করছি শান্তিপূর্ণভাবে। কিন্তু আগের মতো গ্রেপ্তার, গুম-খুন, বানোয়াট মামলা যদি বন্ধ না করেন প্রতিবাদ নয়, প্রতিরোধ করা হবে।
ফেনী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক শেখ ফরিদ বাহারের সভাপতিত্বে পথসভা সঞ্চালনা করেন যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক এম এ খালেক, গাজী হাবিবুল্লাহ মানিক এবং আনোয়ার হোসেন পাটোয়ারী।
সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্ল্যাহ বুলু, মোহাম্মদ শাহজাহান, আবদুল আউয়াল মিন্টু, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভূঞা, জয়নুল আবদীন ফারুক, জয়নাল আবেদীন ভিপি, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী প্রমুখ।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, ১৫০ কিলোমিটারের এই রোডমার্চ কুমিল্লা থেকে শুরু হয়ে ফেনী, মিরসরাই হয়ে চট্টগ্রাম নগরে গিয়ে শেষ হবে। এতে মোট চারটি পথসভা করা হবে। সকাল ১০টায় প্রথম সভাটি হয় কুমিল্লায়। এই সভা শেষে রোডমার্চ রওনা হয় ফেনীর পথে।
ফেনীর মহিপাল ফ্লাইওভারের দক্ষিণাংশে দ্বিতীয় পথসভা হয়। এরপর চট্টগ্রামের মিরেরসরাই উপজেলা সদরে তৃতীয় পথসভা হবে। সবশেষে চট্টগ্রাম নগর বিএনপির কার্যালয়-সংলগ্ন কাজীর দেউড়ি মোড়ে সমাবেশ হবে।
আরএআর