কালীগঞ্জে ইউএনওর ওপর হামলায় আ. লীগ নেতাকর্মীদের নামে মামলা
গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চত্বরে গাড়ি রাখতে নিষেধ করায় ইউএনও, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী ও আনসার সদস্যদের ওপর হামলার ঘটনায় কালীগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে আনসার সদস্য আকরাম হোসেন বাদী হয়ে চেয়ারম্যানসহ ১৫ জনের নামে মামলা করেন। মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও ২০-২৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার প্রধান আসামি হলেন- কালীগঞ্জ উপজেলার মোক্তারপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও মোক্তারপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন।
বিজ্ঞাপন
মামলার অন্য আসামিরা হলেন- মো. জাকির (৪৭), আকরাম হোসেন (৪৮), সিদ্দিকুর রহমান (৪৩), মো. কাজল (৩৪), মো. কামাল হোসেন ফরাজী (৩৫) মো. হেকিম (৬০), ফয়সাল ফকির (৪৫), মো. কালাম (৩৪), জাহাঙ্গীর মেম্বার (৪৫), রুবেল পালোয়ান (৩২), মনির (৩৮), জাহিদুল (২৮), সিরাজ (৪৫) ও অজ্ঞাত এক আসামি।
থানায় দায়েরকৃত এজাহার ও উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, শহীদ ময়েজউদ্দিনের ৩৯তম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে কালীগঞ্জ আর আর এন পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে শনিবার দুপুরে এক স্মরণসভার আয়োজন করে উপজেলা আওয়ামী লীগ। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক। স্মরণসভা উপলক্ষ্যে দুপুরে বিভিন্ন এলাকার নেতাকর্মীরা সমাবেশস্থলে উপস্থিত হতে শুরু করেন। মোক্তারপুর ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আলমগীর হোসেনের নেতৃত্বে একদল নেতাকর্মী অটোরিকশা ও মোটরসাইকেল নিয়ে উপজেলা পরিষদ চত্বরের ভেতর জড়ো হন।
এ সময় উপজেলা পরিষদ চত্বরে শিল্পকলা একাডেমিতে জাতীয় কন্যা দিবস উপলক্ষ্যে অনুষ্ঠান চলছিল। প্রথমে উপজেলা পরিষদের নিরাপত্তায় দায়িত্বরত আনসার সদস্যরা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের গাড়ি চত্বরের বাইরে নিয়ে রাখার অনুরোধ করেন। কিন্তু নেতাকর্মীরা এতে উত্তেজিত হয়ে ওঠেন। খবর পেয়ে ইউএনও আজিজুর রহমান নিজে সেখানে আসেন। তিনি ইউপি চেয়ারম্যানকে ডেকে বলেন, স্থানীয় সংসদ সদস্যসহ গুরুত্বপূর্ণ লোকজন উপজেলা পরিষদে আসবেন। সম্ভব হলে নেতাকর্মীদের গাড়ি যেন বাইরের খোলা জায়গায় নিয়ে রাখা হয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে চেয়ারম্যান উচ্চস্বরে বাক্য বিনিময় শুরু করেন ইউএনওর সঙ্গে। সে সময় চেয়ারম্যানের সঙ্গে থাকা নেতাকর্মীরা এগিয়ে এসে ইউএনওসহ তার সঙ্গে থাকা লোকজনের ওপর চড়াও হন। একপর্যায়ে তারা ইউএনওকে লাঞ্ছিত করেন। তখন সরকারি কর্মচারী ও আনসার সদস্যরা ইউএনওকে রক্ষা করার চেষ্টা করলে তাদের ওপর হামলা চালায় চেয়ারম্যানের লোকজন ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। একপর্যায়ে উত্তেজিত নেতাকর্মীরা ইউএনওর কার্যালয় এবং উপজেলা নির্বাচন কার্যালয়ে ইটপাটকেল মারতে থাকেন। এতে কয়েকটি জানালার গ্লাস ভেঙে যায়। পরে পুলিশ লাঠিপেটা করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন।
কালীগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ফায়েজুর রহমান জানান, মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
শিহাব খান/এএএ