গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার রামদিয়া শাখা কৃষি ব্যাংকে কৃষককে আটকে রেখে মারধরের ঘটনায় তিন ব্যাংক কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। 

সাময়িক বরখাস্ত হওয়া তিন কর্মকর্তা হলেন- গোপালগঞ্জ কৃষি ব্যাংকের আঞ্চলিক শাখা ব্যবস্থাপক মো. আব্দুল আজিজ, কাশিয়ানী উপজেলার কৃষি ব্যাংক রামদিয়া শাখা ব্যবস্থাপক মো. ইলিয়াস হোসেন ও তদন্ত কর্মকর্তা (আইও) রাফিজুল ইসলাম।

বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) বিকেলে সাময়িক বরখাস্ত হওয়া গোপালগঞ্জ কৃষি ব্যাংকের আঞ্চলিক শাখা ব্যবস্থাপক মো. আব্দুল আজিজ এ তথ্য নিশ্চিত করেন। আজই তাদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে বলে জানান তিনি। 

আব্দুল আজিজ বলেন, সেদিনের ঘটনা অনাকাঙ্ক্ষিত। এ ঘটনায় আমিসহ তিনজনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। আমি এর চেয়ে বেশি কিছু বলতে পারছি না।

জানা গেছে, এক মাস আগে গাভি মোটাতাজাকরণ প্রকল্পের জন্য ৩ লাখ টাকা ঋণ নিতে রামদিয়া কৃষি ব্যাংকে যান দেনায়েত সরদার (৬২) নামে এক কৃষক। এ সময় তিনি জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি ও এক কপি ছবি ব্যাংকে জমা দিয়ে আসেন। ২০ আগস্টে ব্যাংকের তদন্ত কর্মকর্তা (আইও) রাফিজুল ইসলাম ওই কৃষকের বাড়িতে সরেজমিনে তদন্তে যান। পরে মিষ্টি খাওয়ার কথা বলে কিছু উৎকোচ দাবি করেন। কিন্তু দেনায়েত সরদার উৎকোচ দিতে রাজি না হওয়ায় দায়দেনার কারণ দেখিয়ে ঋণের আবেদন বাতিল করে দেন ওই কর্মকর্তা।

এ বিষয়ে গত ৭ সেপ্টেম্বর কৃষক দেনায়েত সরদার বাংলাদেশ ব্যাংকের অভিযোগ সেলে ই-মেইলের মাধ্যমে অভিযোগ দায়ের করেন। যার প্রেক্ষিতে কৃষি ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে গত সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) গোপালগঞ্জ আঞ্চলিক শাখা ব্যবস্থাপক আব্দুল আজিজ ও তার সহযোগী অভিযোগের বিষয়টি তদন্তের জন্য রামদিয়া কৃষি ব্যাংকে যান। তদন্ত চলাকালে কিছু লোকজন অতর্কিতভাবে ব্যাংকের মধ্যে প্রবেশ করে অভিযোগকারী ও তার সঙ্গে থাকা ছেলে এবং জামাতার সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। একপর্যায়ে তারা ব্যাংকের সবগুলো গেট ও দরজা লাগিয়ে দেন এবং ব্যাংকের সিসি ক্যামেরা বন্ধ করে অভিযোগকারী ও তার লোকজনকে তদন্ত কর্মকর্তার সামনেই বেধড়ক মারধর করেন। পরে মারধরের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। এতে সমালোচনার ঝড় ওঠে। এ ঘটনায় মারধরের শিকার কৃষক দেনায়ের সরদার বাদী হয়ে গোপালগঞ্জ আদালতে ১১ জনকে আসামি করে মামলা করেছেন। 

আশিক জামান/আরএআর