রংপুর নগরীতে প্রায়ই দেখা মেলে রিকশার মতো দেখতে ব্যতিক্রম এক বাইক। যার চালক সত্তরোর্ধ্ব বয়সী মোহাম্মদ আলী। পেশায় তিনি একজন গ্রাম্য কবিরাজ। ধুলাবালি আর রোদ-বৃষ্টি থেকে বাঁচতে নিজ উদ্যোগে সেফটি বাইকটি তৈরি করেছেন তিনি। 

মোহাম্মদ আলী বগুড়া জেলার বাসিন্দা। পেশার প্রয়োজনে নিজের তৈরি করা সেফটি বাইক নিয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ঘুরে বেড়ান তিনি। তার এই বাইক দেখে কৌতূহলী মানুষ ভিড় করে। কখনো আবার তার বাইকের গতিরোধ করে ছবিও তোলেন অনেকে।

সম্প্রতি নগরীর সিওবাজার সড়কে চেয়ারম্যানের মোড় এলাকায় কথা হয় এই প্রতিবেদকের। হাসিমুখে ঢাকা পোস্টকে সৌখিন এই কবিরাজ বলেন, আমাকে প্রায় সময় দেশের উত্তর-দক্ষিণ অঞ্চলে যেতে হয়। ঠান্ডার সময় মোটরসাইকেল চালাতে শীত অনুভব হয়। যার কারণে আমি বাইকের সামনে বাতাস প্রটেক্টর লাগিয়েছি। এরপর অনুভব করি আমার হাতেও বাতাস লাগে তখন আমি হাতের বাতাস ঠেকাতে কিছু গ্রিপও যুক্ত করি।

মোহাম্মদ আলী বলেন, পারিবারিক কিছু প্রয়োজনে স্ত্রীসহ চলাচল করতে হয়। বৃষ্টিতে অনেক সময় গা ভিজে যায়। যার ফলে স্ত্রীর অনুরোধে বাইকের উপরে ছাউনি তৈরি করেছি। এখন পুরো বাইকটি আমার জন্য সেফ। তবে সমস্যা হলো রাস্তায় বের হলে লোকজন শুধু গাড়ি থামিয়ে দেয়। অনেকে গতিরোধ করে গাড়িটি দেখে, ছবি তোলে। সাধারণ মানুষের পাশাপাশি ট্রাফিক পুলিশের ভাইয়েরাও আমার ছবি তুলে নেয়, এটা আমার খুব ভালো লাগে।

মোটরবাইকটি দেখতে ভিড় করা বিভিন্ন বয়সী মানুষের মধ্য থেকে কথা হয় আরিফুল ইসলাম নামে এক যুবকের সঙ্গে। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, প্রথমে দেখে মনে হয়েছিল অটোরিকশা হবে। কিন্তু কাছে এসে ভালো করে দেখলাম এটা মোটরসাইকেল। সুরক্ষার বিষয়টি ভালো লাগলো। 

সুলতান মিয়া নামে আরেক পথচারী বলেন, মোটরসাইকেলটি দেখতে ব্যতিক্রম। এজন্য অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে দেখলাম এবং ফোনে কয়েকটা ছবিও তুলেছি। ভালোই লাগলো অনেকের মোটরসাইকেলে তো লাইসেন্সও থাকে না। কিন্তু এই লোক লাইসেন্সসহ আনুষঙ্গিক কাগজপত্র, মাথায় হেলমেট পড়া এবং সেফটি দিয়ে যেভাবে বাইকটি বানিয়েছেন, তা সত্যিই অসাধারণ।

নাম না প্রকাশের শর্তে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশে কর্মরত এক ট্রাফিক পুলিশ সদস্য বলেন, বাইকটি ওই বৃদ্ধ চালকের সুরক্ষার জন্য হলেও অন্যদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। কারণ এটি হঠাৎ করে অন্য কেউ চালাতে গেলে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না। দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে।  

ফরহাদুজ্জামান ফারুক/আরকে