প্রায় ১০ বছর পর হতে যাচ্ছে লালমনিরহাট জেলা জাতীয় পার্টির সম্মেলন। এই সম্মেলনকে ঘিরে নতুন নেতাকর্মীদের দেখা গেলেও প্রবীণ নেতাকর্মীদের পদত্যাগের হিড়িক পড়েছে। গত এক সপ্তাহে জেলা জাতীয় পার্টির অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী পদত্যাগ করেছেন। 

শুক্রবার (১৫ সেপ্টেম্বর) রাতে পৌর জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক আলমগীর হোসেন নেতাকর্মীদের পদত্যাগের বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। নেতাকর্মীদের পদত্যাগের একটি চিঠি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। যে কারণে জাতীয় পার্টিকে নিয়ে আলোচনা ও সমালোচনা শুরু হয়েছে নতুন করে। 

জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে নেতাকর্মীদের সঠিক মূল্যায়ন না করা, সরকারি প্রজেক্ট বরাদ্দে জেলা জাতীয় পার্টির সদস্য সচিবের একক আধিপত্যে নেতাকর্মীরা আলমগীর হোসেনের প্রতি ক্ষুব্ধ। এ কারণেই সম্মেলনের আগে তারা পদত্যাগ করছেন। প্রবীন নেতাকর্মীরা প্রকাশ করেছেন পদত্যাগের মাধ্যমে। নির্বাচনের আগে নেতাকর্মীদের গণ পদত্যাগ ভোটের মাঠে জাতীয় পার্টিতে প্রভাব ফেলবে বলে ধারণা স্থানীয় রাজনীতিবিদদের।

সম্প্রতি পৌর জাতীয় পার্টির সদস্য সচিব রবিউল ইসলাম আউয়াল, জেলা জাতীয় তরুণ পার্টির সদস্য সচিব শফিকুল ইসলাম শফিক, সদর উপজেলা জাতীয় তরুণ পার্টির সদস্য সচিব জাহাঙ্গীর আলম রাজু, পৌর সভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের জাতীয় তরুণ পার্টির সাধারণ সম্পাদক লিটন চন্দ্র রায়, একই ওয়ার্ডের সহ-সভাপতি শাহিনুর ইসলাম ও একই ওয়ার্ডের ৩৫ জনসহ মোট অর্ধ-শতাধিক নেতাকর্মী এক সঙ্গে পদত্যাগ করেন।

এ বিষয়ে সদ্য পদত্যাগ করা পৌর জাতীয় পার্টির সদস্য সচিব রবিউল ইসলাম আউয়াল বলেন, ‘দীর্ঘদিন থেকে জাতীয় পার্টির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। কিন্তু এখানে নেতা-কর্মীদের কোনো মূল্যায়ন নেই। তাছাড়া দলের সদস্য সচিবের একক আধিপত্য বিস্তারের কারণে কোনো নেতাকর্মী দাম পায় না। তিনি যা করবেন তাই। আমাদের কথার কোনো মূল্যায়ন নাই। তাই আমি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

পদত্যাগকৃত নেতাকর্মীদের ধারণা, তাদের মতো আরও বহু নেতাকর্মী দল থেকে সরে দাঁড়াবেন। তবে এমনটি মনে করেন না পৌর জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক আলমগীর হোসেন।

তিনি বলেন, ‘যারা পদত্যাগ করছে তারা কোনো পদে নেই। ফলে তাদের পদত্যাগ দলের ওপর কোনো প্রভাব ফেলবে না।’

শনিবার দুপুরে জেলা জাতীয় পার্টির সম্মেলন। সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের। এতে আরো উপস্থিত থাকবেন পার্টির কো-চেয়ারম্যান ও প্রেসিডিয়াম সদস্য আনিসুল ইসলাম মাহমুদ চৌধুরী এবং মহাসচিব মজিবুল হক চুন্নুসহ ২৩ জেলার জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় রাজনীতিবীদরা। নেতার্কমী সম্মেলনে হাজার হাজার নেতা-কর্মী সমর্থকদের সমাগম ঘটবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা তাদের বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছি কেন তারা পদত্যাগ করছে। আশা করি এসব সমস্যা দ্রুত সমাধান হবে।’

নিয়াজ আহমেদ সিপন/আরকে