গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে গ্রাহকের সঞ্চয়পত্রের ৩৯ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে অগ্রণী ব্যাংকের এক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। উপজেলার রামদিয়া বাজার অগ্রণী ব্যাংক শাখার ক্যাশ কর্মকর্তা মিন্টু বিশ্বাসের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ উঠেছে।

গ্রাহকদের অভিযোগে জানা গেছে, অগ্রণী ব্যাংকের ওই শাখায় ৫ বছর মেয়াদী পরিবার সঞ্চয়পত্র কেনার জন্য প্রায় ১৫ জন গ্রাহক ৩৯ লাখ টাকা জমা রাখেন। ব্যাংকের নিয়মানুযায়ী প্রথমে সেভিংস একাউন্ট খুলে টাকাটা সেখানে জমা রাখতে হয়। পরবর্তীতে ব্যাংকের ক্যাশ কর্মকর্তা টাকার কর্তৃপক্ষ (অর্থরাইজ) হিসেবে জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট হিসাবে ট্রান্সফার করেন। হিসাব খোলার সময় গ্রাহককে স্বাক্ষরিত চেকের পাতা জমা দিতে হয়। তবে মিন্টু বিশ্বাস গ্রাহকদের টাকা জমার রশিদ দিলেও, সঞ্চয়পত্র কেনার কোনো ধরণের রশিদ দেননি। তিনি গ্রাহকের সেভিংস একাউন্ট থেকে গ্রাহকের স্বাক্ষরিত চেক দিয়ে টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেন। পরে গ্রাহকরা ব্যাংকে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, তাদের হিসাবে কোনো টাকা জমা হয়নি। এ ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর গ্রাহকদের মাঝে চরম ক্ষোভ ও শঙ্কা দেখা দিয়েছে। 

ভুক্তভোগী গ্রাহক সীমা টিকাদার বলেন, কষ্টার্জিত ৫ লাখ টাকা পাঁচ বছর মেয়াদী পরিবার সঞ্চয়পত্র হিসেবে ব্যাংকে জমা রাখি। ব্যাংক কর্মকর্তা মিন্টু বিশ্বাস সেই টাকা সঞ্চয়পত্র হিসাবে জমা না দিয়ে আত্মসাৎ করেন। টাকা জমা দেওয়ার সময় স্বাক্ষর করা চেকের পাতা জমা দিয়েছিলাম। পরে আমি খোঁজ নিয়ে জানতে পারি তিনি আমার সঞ্চয়পত্রের হিসাবে টাকা জমা না দিয়ে আত্মসাৎ করেছেন। এ নিয়ে পরিবারে চরম অশান্তি সৃষ্টি হয়েছে।

একইভাবে উপজেলার গুঘালিয়া গ্রামের হেরা বেগমে ২ লাখ, জোতকুরা গ্রামের গৌরী খানের ২ লাখসহ অনেক গ্রাহকের টাকা আত্মসাৎ করেছেন ওই ব্যাংক কর্মকর্তা।

অভিযুক্ত ব্যাংক কর্মকর্তা মিন্টু বিশ্বাসের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করলেও তিনি রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

অগ্রণী ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক ইমাম হোসাইন মেহেদী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ঘটনার পর বিষয়টি ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে আমি লিখিতভাবে জানিয়েছি। প্রধান কার্যালয় থেকে ব্যাংকে তদন্ত টিম এসেছিল। মিন্টু বিশ্বাসকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি দায় স্বীকার করেছেন এবং টাকা আত্মসাৎ করেছেন মর্মে স্ট্যাম্পে লিখিত দিয়েছেন। গ্রাহকরা তাদের টাকা ফেরত পাবেন বলে তিনি জানিয়েছেন।

আশিক জামান/আরকে