ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নৌকা বাইচ দেখতে তিতাসপাড়ে মানুষের ভিড়
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে তিতাসের বুকে এই নৌকা বাইচ দেখতে ভিড় করে প্রায় অর্ধ লক্ষাধিক মানুষ। বছর ঘুরে আবারো ছলাৎ ছলাৎ শব্দে গর্জে উঠে তিতাস তীরে সুন্দইরা মাঝির বৈঠা। চমৎকার এই ক্ষণে শামিল হতে সকাল থেকেই তিতাস পাড়ে ভিড় করতে শুরু করেন দর্শকরা।
শহরের যান্ত্রিক কোলাহল আর অপসংস্কৃতির আড়ালে দিন দিন হারাতে বসেছে বাঙালির প্রাণের উৎসব আর সংস্কৃতি। তবুও যেটুকু টিকে আছে, তাতেই খুশি সহজ সরল এই মানুষগুলো। পড়ন্ত বিকেলে চমৎকার এই নৌকা বাইচ তাদের নিয়ে গেছে এক রকম ঘোরের রাজ্যে। নৌকা বাইচ উপলক্ষ্যে শহরজুড়ে উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি হয়। ভাদ্রের তপ্ত দুপুর গড়ানোর আগেই জেলার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ছোট বড় নৌকা নিয়ে উৎসাহী দর্শকরা নদীর দুই পাড়ে হাজির হতে থাকেন।
বিজ্ঞাপন
বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ডস কোম্পানি লিমিটেড, দারাজ বাংলাদেশ ও ইউনিভার্সেল মেডিকেল সার্ভিসেস ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সহযোগিতায় জেলা প্রশাসন তিতাস নদীতে ঐতিহ্যবাহী নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। পৌর এলাকার শিমরাইলকান্দি গাঁওগ্রাম এলাকা থেকে মেড্ডার শিশু পরিবার এলাকায় তিতাস নদীতে অনুষ্ঠিত হয় এই নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা।
এবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদরের ৪টি, বিজয়নগর উপজেলার ৫টি, নবীনগর উপজেলার ২টি, আশুগঞ্জ উপজেলার ২টি ও নাসিরনগর উপজেলার ১টিসহ মোট ১৫টি প্রতিযোগী দল তাদের সুসজ্জিত নৌকা আর রঙ বেরঙের বাহারি পোশাক পড়ে এই প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। প্রতিযোগিতা চলার সময় বাদ্যযন্ত্রের তালে তালে মাঝিদের ভাটিয়ালি গান আর পানিতে বৈঠার ছলাৎ ছলাৎ আওয়াজে পুরো এলাকা মুখরিত হয়।
বিকেল ৩টার দিকে পৌর এলাকার শিমরাইলকান্দি গাঁওগ্রাম এলাকায় নৌকা বাইচের উদ্বোধন করেন স্থানীয় সংসদ সদস্য র.আ.ম. উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী। এ সময় জেলা প্রশাসক মো. শাহগীর আলম, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন, প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক বাহারুল ইসলাম মোল্লা উপস্থিত ছিলেন। পরে মেড্ডার কালাগাজীর মাজার এলাকায় পুরষ্কার বিতরণ করা হয়।
নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অর্জন করে নবীনগর উপজেলার নৌকা, দ্বিতীয় স্থান অর্জন করে সরাইল উপজেলার নৌকা এবং তৃতীয় স্থান অর্জন করে আশুগঞ্জ উপজেলার নৌকা। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি সংসদ সদস্য র.আ.ম. উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী প্রথম স্থান অর্জনকারী দলকে ১ লাখ টাকা, দ্বিতীয় স্থান অর্জনকারীকে ৫০ হাজার টাকা এবং তৃতীয় স্থান অর্জনকারীকে ৩০ হাজার টাকা এবং ট্রফি দেন। এছাড়াও প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী প্রত্যেক দলকে নগদ ২৫ হাজার টাকা দেওয়া হয়।
বাহাদুর আলম/আরএআর