রয়েল রিসোর্টে হেফাজত নেতাকর্মীদের হামলা
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলায় হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হককে নারীসহ অবরুদ্ধ করার ঘটনায় রয়েল রিসোর্টে হামলা চালিয়েছেন হেফাজতের নেতাকর্মীরা।
শনিবার (০৩ এপ্রিল) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে রয়েল রিসোর্টে হামলা চালান তারা। এ সময় রিসোর্টের জিনিসপত্র ভাঙচুর করেন হেফাজতের কর্মীরা। এতে কয়েকজন আহত হয়েছেন।
বিজ্ঞাপন
পুলিশ জানায়, মামুনুল হককে রিসোর্ট থেকে থানায় নিয়ে যাওয়ার পথে হেফাজতের কর্মীরা হামলা চালান। এতে বাধা দেয় পুলিশ। এ সময় হেফাজতের কর্মীরা রিসোর্টের জিনিসপত্র ভাঙচুর করে মামুনুল হককে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু তারা ব্যর্থ হয়েছেন। মামুনুল হক পুলিশি হেফাজতে রয়েছেন।
নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মোশাররফ হোসেন ঘটনাস্থলে রয়েছেন। তিনি বলেন, জিজ্ঞাসাবাদ শেষে মামুনুল হককে থানায় নেওয়ার পথে রিসোর্টে হামলা চালান হেফাজতের কর্মীরা। পরে মামুনুল হককে নিরাপদে স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়। তিনি আমাদের হেফাজতে রয়েছেন।
এর আগে বিকেল সোয়া ৩টার দিকে উপজেলার রয়েল রিসোর্টের পাঁচতলার ৫০১ নম্বর কক্ষে মামুনুল হককে নারীসহ অবরুদ্ধ করে পুলিশে খবর দেয় স্থানীয়রা। তবে ওই নারীকে নিজের স্ত্রী বলে দাবি করেছেন মামুনুল হক।
সোনারগাঁ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি-তদন্ত) তবিদুর রহমান বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ওই নারীকে দ্বিতীয় স্ত্রী বলে দাবি করেছেন মামুনুল হক। বিষয়টি আমরা তদন্ত করে দেখছি।
পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে মামুনুল হক দাবি করেছেন, অবসরকালীন সময় কাটাতে দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে এখানে বেড়াতে এসেছেন। ওই নারীকে দুই বছর আগে বিয়ে করেছেন তিনি। এ নিয়ে পুলিশের সঙ্গে তাকে তর্কবিতর্ক করতে দেখা যায়।
এর আগে, গত বৃহস্পতিবার রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে ইসলামী পিপলস পার্টি হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় এই নেতা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নাশকতায় অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবি জানায়। একই সঙ্গে আগামী রোববারের মধ্যে মামুনুলকে গ্রেফতার করা না হলে সোমবার (০৫ এপ্রিল) সকাল-সন্ধ্যা হরতাল কর্মসূচি পালনের হুঁশিয়ারি দেয় ইসলামী পিপলস পার্টি।
জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘ইসলামের নামে যারা রাষ্ট্রীয় সম্পদ ধ্বংস করে ইসলামের দৃষ্টিতে তাদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া উচিত’ শীর্ষক আলোচনা সভা থেকে ওই ঘোষণা দেন বাংলাদেশ পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান মাওলানা মো. ইসমাইল হোসাইন।
আলোচনা সভায় মাওলানা মো. ইসমাইল হোসাইন বলেন, পবিত্র কোরআন ও হাদিসের আলোকে এ কথা প্রতীয়মান হয় যে, অযথা জ্বালাও-পোড়াও করে রাষ্ট্রীয় সম্পদ নষ্ট করার কোনো সুযোগ ইসলামে নেই। ইসলামের স্বার্থে বা ইসলামিক কোনো দাবি আদায়ের ক্ষেত্রেও ইসলামের প্রকৃত দৃষ্টিভঙ্গি এবং শান্তিপূর্ণ পদ্ধতি অনুসরণ করা উচিত। এক্ষেত্রে দেশে ইসলামী ধর্মীয় দলগুলোকে আরও সচেতন হওয়া দরকার।
শেখ ফরিদ/এএম