সারাদেশের মতো ঠাকুরগাঁওয়েও বেড়েছে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা। সেই সঙ্গে বেড়েছে ডিএনএস ও সাধারণ স্যালাইনের চাহিদা। এই সুযোগে কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে ১০০ টাকার স্যালাইন ৩০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করছেন অসাধু ব্যবসায়ীরা। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন রোগী ও তাদের স্বজনরা।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ঠাকুরগাঁও জেনারেল হাসপাতালের সামনের ফার্মেসিগুলোতে ডিএনএস ও স্যালাইন খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। অনেক অনুরোধের পর স্যালাইন পেলেও দাম নেওয়া হচ্ছে ২০০-৩০০ টাকা। অথচ এসব স্যালাইনের প্যাকেটে দাম দেওয়া আছে ৯০ টাকা। ফার্মেসি মালিকরা সিন্ডিকেট করে কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে ৩০০ টাকা পর্যন্ত এই স্যালাইন বিক্রি করছেন বলে অভিযোগ করছেন ভুক্তভোগীরা ।

ঠাকুরগাঁওয়ে এক প্যাকেট স্যালাইন পেতে নাভিশ্বাস উঠে যাচ্ছে রোগীর স্বজনদের। এ দোকান, সে দোকান ঘুরে কোথাও পাওয়া গেলেও দাম রাখা হচ্ছে প্যাকেটে দেওয়া দামের চেয়ে আড়াই থেকে তিন গুণ বেশি।

স্যালাইন কিনতে গেলে প্রথমেই ‘নেই’ বলে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন দোকানিরা। পরে অনেক অনুরোধের পর এক প্যাকেট স্যালাইন বের করে দিচ্ছেন। আর এভাবেই দাম বেশি রাখছেন।

বেশ কয়েক দিন ধরে ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতালের সামনে চায়ের দোকানেও স্যালাইন বিক্রি হচ্ছে। এই বিষয়ে চায়ের দোকানে গেলে কর্মচারী বলেন, আমি কিছু জানি না, দোকানের মালিক দোকানে নাই। ওই চা ব্যবসায়ী জিয়াউল হকের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি বাসায় গিয়ে চিকিৎসা করি। তাই আমার কিছু রোগীর জন্য আমি দোকানে স্যালাইন নিয়ে রাখে দিয়েছিলাম। তিনি চায়ের ব্যবসার পাশা পাশি ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতালে চুক্তিভিত্তিতে চাকরি করেন। 

রানা ইসলাম নামে একজন বলেন, আমার বউকে নিয়ে হাসপাতালে আসার পরে ডাক্তার আমাকে নরমাল স্যালাইন আনতে বলল। আমি স্যালাইন কিনতে গিয়ে প্রায় ২০ থেকে ২৫টা দোকান ঘুরেও স্যালাইন পাইনি। অবশেষে সেবা হাসপাতালের পাশে ওষুধের দোকানে পাই। তখন আমি ৯০ টাকার স্যালাইন ২৫০ টাকায় কিনেছি।

ডেঙ্গু ওয়ার্ডে চিকিৎসা নিতে আসা, কালাম বলেন, আমার রোগী বাঁচানোর জন্য দাম বেশি হলেও কিনতে হচ্ছে। আমাদের কাছ থেকে ব্যবসায়ীরা ৯০ টাকার স্যালাইন ৩০০ টাকা করে নিচ্ছে। বেশি দামে নিলে নেন, আর না নিয়ে চলে যান। তখন আমরা বাধ্য হয়ে বেশি দামে স্যালাইন কিনছি।

কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতি সভাপতি আজিজ বলেন, আমি শুনেছি অনেক ওষুধ ব্যবসায়ী বেশি দামে স্যালাইন বিক্রি করতেছে। ইতোমধ্যে কয়েকজন ব্যবসায়ীকে আমি সতর্ক করেছি। এর পাশাপাশি আমরা বাজার মনিটরিং করছি।

এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও সদর হাসাপাতালের সিভিল সার্জেন ডা. নুর নেওয়াজ আহমেদ বলেন, আমরা শুনেছি রাতে হাসপাতালের সামনে চায়ের দোকানে স্যালাইন বিক্রি হয়। তাই সকালে গিয়ে সেই দোকানে অভিযান চালিয়েছি এই পর্যন্ত কোনো স্যালাইন পাইনি। এ বিষয়ে দোকানদারদের বিরুদ্ধে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নেবে।

আরিফ হাসান/আরকে