একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে দণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াতে ইসলামীর নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর গায়েবানা জানাজাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ ও গোলাগুলিতে যুবক নিহতের ঘটনায় কক্সবাজারের ছয়টি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় ৪৬৬ জনের নাম উল্লেখসহ আরও ১১ হাজার ৯০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে। 

এর মধ্যে পুলিশ বাদী হয়ে পাঁচটি ও চকরিয়ায় নিহত মোহাম্মদ ফোরকানের স্ত্রী বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশের পাঁচটি মামলা বিশেষ ক্ষমতা আইন ও সরকারি কাজে বাঁধা দেওয়ার দায়ে।

বুধবার (১৬ আগস্ট) রাত ১০টার দিকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. মাহাফুজুল ইসলাম।

তিনি জানিয়েছেন, মঙ্গলবার বিকেলে কক্সবাজার সরকারি কলেজের সামনে পুলিশের সঙ্গে জামায়াতের সমর্থকদের ধাওয়া পালটা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। জানাজা শেষে ঘরে ফিরে যেতে বললে এ ধাওয়া পালটা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় পুলিশের ওপর হামলা ও ভাঙচুর চালানো হয়। এ ঘটনায় কক্সবাজার সদর থানায় ১৬ জনের নাম উল্লেখ করে ২ হাজার ২০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে পুলিশ মামলাটি দায়ের করেন।

কক্সবাজার সদর থানার একটি সূত্র জানিয়েছে, কক্সবাজার সদর থানা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) শাহ নেওয়াজ বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন।

পুলিশ সুপার মাহাফুজুল ইসলাম জানিয়েছেন, চকরিয়ায় সংঘর্ষের ঘটনায় পৃথক তিনটি মামলা হয়েছে। এতে দুইটি মামলার বাদী পুলিশ। অপর মামলাটির বাদী নিহত ফোরকানের স্ত্রী নুরুচ্ছফা। পুলিশ বাদী হয়ে দায়ের করা মামলা দুইটিতে ৭৪ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে ৫ হাজার জনকে। নিহতের স্ত্রীর মামলায় কারও নাম উল্লেখ না থাকলেও আড়াই হাজার জন অজ্ঞাত আসামি।

পুলিশ সুপার আরও জানান, পেকুয়ায় পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে দুইটি মামলা করেছেন। যেখানে ১৫১ জনের নাম উল্লেখ করে ও ২ হাজার ২০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।

পেকুয়া থানার ওসি মোহাম্মদ ওমর হায়দার জানিয়েছেন, পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মুফিজুল ইসলাম বাদী হয়ে এ দুইটি মামলা দায়ের করেন।

ওমর হায়দার বলেন, সরকারি কাজে বাধা, গাড়ি ভাঙচুর ও পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় সহিংসতা ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে দুটি মামলা রুজু হয়েছে। মঙ্গলবার বিকেলে আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর গায়েবানা জানাজা হয় বারবাকিয়া বাজারে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে পুলিশ সেখানে অবস্থান নেয়। নামাজ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নামাজে অংশ নেওয়া লোকজন পুলিশের ওপর হামলা করে। এ সময় আমিসহ ১৫ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়। এ ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পূর্বিতা চাকমার ও থানা পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করা হয়।

পেকুয়ায় দায়ের হওয়া মামলা দুইটির প্রধান আসামি করা হয়েছে পেকুয়া সদর জামায়াতের আমির ও সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান নুরুজ্জামান মঞ্জু। উল্লেখ্যদের মধ্যে বারবাকিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাওলানা বদিউল আলম জিহাদি, পেকুয়া উপজেলা জামায়াতের আমির আবুল কালামের নাম রয়েছে। তবে এসব মামলায় এখনো কাউকে গ্রেপ্তার দেখায়নি পুলিশ। 

সাইদুল ফরহাদ/এএএ