সাম্প্রতিক সময়ে বৈরী আবহাওয়ায় ব্যাপক প্রাণহানির পাশাপাশি অর্থনৈতিক ক্ষতির পরিমাণ অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। আইপিসিসি থার্ড অ্যাসেসমেন্ট রিপোর্ট (টিএআর) অনুসারে গত এক শতাব্দীতে বৈশ্বিক গড় তাপমাত্রা বেড়েছে ০.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এত অনেক জীব ও বাস্তুতন্ত্র পরিবর্তন বা মিউটেশনের সম্মুখীন হয়েছে।

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) ‘বাংলাদেশের কৃষি ক্ষেত্রে জলবায়ু পরিবর্তন ও প্রভাবসমূহ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে এসব কথা বলেন বাংলাদেশ আবহাওয়া বিভাগের প্রধান ড. মো. শামীম হাসান ভুইঁয়া। কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের ‘কৃষি আবহাওয়া তথ্য উন্নয়ন প্রকল্প’ এর অর্থায়নে বুধবার (০৯ আগস্ট) সকাল ১১ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের এগ্রোমেটেরিওলজি বিভাগের সম্মেলন কক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।

ড. শামীম হাসান আরও বলেন, তাপমাত্রা বৃদ্ধিতে বর্তমানে পৃথিবী উত্তপ্ত হচ্ছে, সেই সঙ্গে হিমালয়ের বরফ দ্রুতগতিতে গলছে। এতে সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। অন্যদিকে বাড়ছে হঠাৎ বন্যা, ঘূর্ণিঝড় ও খরাসহ নানা ধরনের দুর্যোগ। ফলে কৃষিতে ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হচ্ছে। এজন্যে আমাদের দক্ষতা সম্পন্ন আবহাওয়াবিদ তৈরি করা দরকার।

আলোচনা সভায় জানানো হয়, বিভিন্ন উপজেলায় বর্তমানে ২৭৪টি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার বসানো হয়েছে। স্থবির কুয়াশার পূর্বাভাসের মাধ্যমে ছত্রাকজনিত রোগের পূর্বাভাস পাওয়া যাবে। এছাড়া ১৩টি ভূমিকম্প পরিমাপক যন্ত্রের মাধ্যমে এখন ভূমিকম্প পরিমাপ করা হয়। এতে অনেক তাড়াতাড়ি ও সঠিক তথ্য পাওয়া যাচ্ছে।

আবহাওয়া সম্পর্কিত সকল তথ্য সহজে পাওয়া এবং তা কৃষকের মাঝে পৌঁছে দেওয়ার জন্যে আমাদের আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করতে হবে। সেই সব প্রযুক্তি ব্যবহার এবং বিস্তারে করণীয় নিয়েই দক্ষ ব্যক্তি গড়ে তুলতেই কাজ করবে এগ্রোমেটেরিওলজি বিভাগ।

এগ্রোমেটেরিওলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. এ. বি. এম আরিফ হাসান খান রবিনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীবৃন্দ। এ সময় বাংলাদেশের কৃষির উপর জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব ও ভবিষ্যৎ করণীয় বিষয়সমূহ নিয়ে আলোচনা করা হয়। আলোচনা শেষে একটি উন্মুক্ত প্রশ্নোত্তর পর্ব পরিচালনা করা হয়।

মুসাদ্দিকুল ইসলাম তানভীর/এএএ