ফেনী-পরশুরাম সড়ক ডুবে যান চলাচল বন্ধ
টানা বৃষ্টি ও উজানের পানিতে মুহুরী নদীর বাঁধ ভাঙনে সৃষ্ট বন্যায় ফেনী-পরশুরাম আঞ্চলিক সড়ক ডুবে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে ২ উপজেলার অভ্যন্তরীণ ও জেলা সদরের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। এতে ব্যাপক দুর্ভোগে পড়েছেন জেলার উত্তরের জনপদের মানুষজন।
উপজেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, সড়কের ঘনিয়া মোড়া থেকে চিথলিয়া পর্যন্ত রাস্তা পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এছাড়া ফুলগাজীসহ উপজেলার বিভিন্ন অভ্যন্তরীণ সড়কও পানির নিচে ডুবে গেছে।
বিজ্ঞাপন
স্থানীয়দের দেওয়া তথ্যমতে, সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অসুস্থ রোগী, স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী ও অফিসগামী লোকজনসহ খুবই ভোগান্তিতে পড়ছে। এতে বিকল্প সড়ক হিসেবে ছাগলনাইয়া উপজেলাকে ব্যবহার করলেও সেখানে নানা জটিলতার সৃষ্টি হচ্ছে।
জরুরি প্রয়োজনে ফেনী আসা জাহিদুল ইসলাম শাওন জানান, সড়কে গাড়ি তো দূরের কথা, হেঁটে যাওয়া কষ্টকর হয়ে গেছে। একটি সিএনজি অটোরিকশায় পরশুরাম থেকে ছাগলনাইয়া হয়ে ফেনী এসেছি। সেখানে ৪০ টাকার নিয়মিত ভাড়া আজকে ১০০ টাকা দিতে হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড ফেনীর উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. আরিফুর রহমান ভূঁইয়া ঢাকা পোস্টকে জানান, মুহুরী নদীর পানি বিপৎসীমার ১৫৪ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও ভারতীয় উজানের পানিতে রাস্তা ডুবে গেছে। ফুলগাজীর ভাঙনে আর নতুন এলাকা প্লাবিত না হলেও পরশুরামে তার চিত্র ব্যতিক্রম। সেখানে প্রায় ১০০ মিটারের বেশি জায়গায় ভাঙন ও নদী সমান গভীর হয়ে যাওয়ায় বেশি পানি প্রবাহিত হয়ে নতুন নতুন গ্রাম প্লাবিত হচ্ছে। তবে বিপৎসীমার আর ৩০ সেন্টিমিটার নিচে নেমে এলে পানির গতি কমে যাবে।
>>> ফেনীতে মুহুরী নদীতে ভাঙনে ৯ গ্রাম প্লাবিত
সোমবার ফেনীর ফুলগাজী-পরশুরামে মুহুরী নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে ৩টি স্থানে ভাঙনে একের পর এক লোকালয় প্লাবিত হচ্ছে। এতে দুই উপজেলার অন্তত ২০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে বলে জানান উপজেলা প্রশাসন।
পানি উন্নয়ন বোর্ড ফেনীর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাশেদ শাহরিয়ার জানান, আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরে টেকসই মুহুরী বাঁধ নির্মাণ কাজ শুরু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। নির্মাণকাজ শুরু হলে কাজ শেষ হতে ৪ থেকে ৫ বছর সময় লাগতে পারে। ইতোমধ্যে পরামর্শক নিয়োগের জন্য নিয়মতান্ত্রিক কাজ শুরু হয়েছে। এজন্য প্রায় সাড়ে ৫ কোটি টাকা বরাদ্দ এসেছে।
পরশুরাম উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্র জানায়, বিদ্যালয়ে পানি প্রবেশ করায় চিথলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চিথলিয়া নাসির উদ্দিন স্কুল, ধনীকুন্ডা আলা উদ্দিন আহমেদ দাখিল মাদরাসাসহ বেশ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শ্রেণি কার্যক্রম ব্যহত হচ্ছে।
ফেনী জেলা প্রশাসক শাহীনা আক্তার বলেন, বন্যাদুর্গত এলাকা নিয়মিত নজরদারি করা হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে শুকনো খাবার ও চাল বিতরণ চলমান রয়েছে।
তারেক চৌধুরী/আরকে