পতিত জমিতে বিরল প্রজাতির গাছ লাগিয়ে সাড়া ফেলেছেন ওমর
দেশি-বিদেশি হরেক প্রজাতির গাছ দিয়ে শখের বাগান করে সাড়া ফেলেছেন ওমর ফারুক প্রিন্স। শখের বাগান হলেও ক্যান্সার প্রতিরোধী করোসল আর আফ্রিকান ননী ফল আশা জাগাচ্ছে তার বাগানে। শরীরের কোলেস্টেরল কমাতে অ্যাভোকাডো ও জয়তুন, আর হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি এড়াতে চালতা ফল। এছাড়াও মসলা আর ভেষজ গুণ সমৃদ্ধ নানান ফুল ও ফল। খুব সহজেই বাড়ির আশপাশের পতিত জমিতে এমন বাগানই গড়ে তুলেছেন তিনি।
মেহেরপুরের মুজিবনগরের মুন্সি পরিবারের ওমর ফারুক প্রিন্স। তিনি পেশায় একজন সংবাদকর্মী। বসতবাড়ির পতিত জমিতে গড়ে তুলেছেন শখের বাগান। বাড়ির ছাদের টবে শোভা পাচ্ছে অনেক উপকারী গাছ। বাগানের আয়তন খুব বড় না হলেও দেশি-বিদেশি গাছের তালিকা ছোট নয়। শখের এই বাগানটিতে রয়েছে ৩০০ এর অধিক গাছ। করোসল, অ্যাভোকাডো, আফ্রিকান ননী ফল, চালতা, গাব, চেরি ফল, ইরানি বেল, আম, আতা, আমড়া ও হলুদ ড্রাগনসহ কি নেই এই বাগানে। এসব ফলের ওষধি গুণ যেমনি মানুষের কাছে আকর্ষণীয় তেমনি দুষ্প্রাপ্য এই ফল যে আবাদযোগ্য তা প্রমাণ করেছেন তিনি।
বিজ্ঞাপন
বাগানটিতে ফলের পাশাপাশি মসলা জাতীয় গাছের মধ্যে এলাচ, গোলমরিচ, লবঙ্গ, পানের বিকল্প-পান বিলাস রয়েছে। দেশি ফুলের পাশাপাশি রয়েছে ওষধি গুণাগুণের এরোমেটিক জুঁই ও ব্রেডফ্রুট। মূল্যবান এতসব ভেষজ গাছগাছালি, মানুষ ও প্রাণীকুলের প্রয়োজনে উন্মুক্ত। প্রয়োজন হলে যে কেউ এই বাগান থেকে নিতে পারেন ফল, ফুল আর ওষধি গাছের লতাপাতা। এলাকার মানুষের উপকারের জন্যই বাগানটি গড়ে তোলা হয়েছে বলে জানালেন মুন্সি পরিবারের সদস্যরা। বাগান টিকিয়ে রাখতে প্রতিনিয়তই চলে পরিচর্যার কাজ।
মুন্সি ওমর ফারুক প্রিন্স বলেন, প্রথমে সখের বসে ছোট পরিসরে ওষধি গাছ রোপণ করি। নিজেদের প্রয়োজনে বাগানটি আস্তে আস্তে বড় হয়েছে। বাগানে দেশি-বিদেশি মোট ৩০০ প্রজাতির গাছ রয়েছে। এখন শুধু আমাদের প্রয়োজনই নয়, নিজের জেলা ও জেলার বাইরের মানুষও আসে দুষ্প্রাপ্য বিভিন্ন ফল আর ওষধি গাছ ও লতাপাতা নিতে।
বগুড়া জেলার সিমুলতলার মিলন হোসেন বলেন, আমার বিশেষ প্রয়োজনে কিছু ফল ও ওষধি গাছের লতাপাতার বিশেষ প্রয়োজন হওয়ায় আমি মুন্সি মামাকে জানায়। তিনি তার বাগানে এসব গাছ ও ফল আছে জানালে আমি এগুলো নিতে এসেছি। আমারও এমন একটি বাগান করার ইচ্ছে আছে।
স্থানীয় যুবক পাভেল হোসেন জানান, বাগানটি দেখে উদ্বুদ্ধ ও অনুপ্রাণিত হয়েছেন। বাড়ির ছাদে এমন একটি বাগান করার পরিকল্পনা থেকেই পরামর্শ নিতে এসেছেন। মুন্সি পরিবারের এই বাগানটি এলাকার মানুষের জন্য অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত। অতি উপকারী এই বাগান এখন এলাকার মানুষের কাছে একটি অনুপ্রেরণার নাম। যার মাধ্যমে এলাকার মানুষ অনেক বেশি উপকৃত।
বসতবাড়ির পতিত জমিতে মনোমুগ্ধকর বাগান করে মডেল সৃষ্টি করেছেন মুন্সি পরিবারের সদস্যরা। এ ধরনের বাগান করতে সারা দেশের মানুষ এগিয়ে আসবে বলে আশা প্রকাশ করলেন মুজিবনগর উপ-সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা মিজানুর রহমান।
আকতারুজ্জামান/এএএ