২০১৬ সালের ২৬ জানুয়ারি ফৌজদারি মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি হওয়ায় কক্সবাজারের উখিয়ার পালংখালী ইউপি চেয়ারম্যান গফুর উদ্দিন চৌধুরীকে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় সাময়িক বরখাস্ত করে।

আবারও একই অভিযোগের কারণে বর্তমানেও টানা তৃতীয় মেয়াদে দায়িত্বরত গফুর উদ্দিন চৌধুরীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন।

বুধবার (২ আগস্ট) স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব বরাবর কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ শাহীন ইমরান স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত একটি চিঠি প্রেরণ করা হয়।

চিঠিতে গফুর উদ্দিন চৌধুরীর বিরুদ্ধে করা চারটি মামলার অভিযোগপত্র আদালত কর্তৃক গৃহীত হওয়ায় এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করা হয়েছে।

একই সঙ্গে উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইমরান হোসাইন সজীবের বরাতে গফুর উদ্দিন চৌধুরীর বিরুদ্ধে আদালতে গ্রহণ করা চার মামলার অভিযোগপত্রে সার্টিফাইড কপি চিঠিতে সংযুক্ত করা হয়।

>>>বরখাস্ত হচ্ছেন ইউপি চেয়ারম্যান বাবু

স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন ২০০৯ এর ৩৪ (১) ধারা অনুযায়ী কোনো চেয়ারম্যান ফৌজদারি মামলায় আদালতে গ্রহণ করা অভিযোগপত্রের আসামি হলে সাময়িক বরখাস্ত করার বিধান রয়েছে।

এ প্রসঙ্গে জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ শাহীন ইমরান বলেন, "কোনো চেয়ারম্যান ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত হলে আইন অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। পালংখালীর চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে চারটি মামলায় আদালত অভিযোগপত্র গ্রহণ করেছেন। উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার পাঠানো তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী বিষয়টি জেলা প্রশাসন স্থানীয় সরকার বিভাগকে জানিয়েছে।"

চেয়ারম্যান গফুর উদ্দিন চৌধুরী বলেন, " বিষয়টি আমি জানি, সেজন্যই ঢাকা এসেছি। এটি একটি প্রতিবেদন যেখানে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে, এখনও কোনো সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়নি। তবে যেটাই হোক মেনে নেব।"

গফুর উদ্দিন চৌধুরীর বিরুদ্ধে আদালতে সর্বশেষ গৃহীত হওয়া মামলাটি পাঁচ লাখ টাকা চাঁদাবাজির অভিযোগ এনে করা। সিরাজুল মোস্তফা নামে এক ব্যক্তি চেয়ারম্যানকে প্রধান আসামি করে মামলা করেন বলে জানা গেছে।

এ মামলার প্রধান সাক্ষী পালংখালী ৪নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা শেখ নুরুল আলমের সাক্ষ্য দেওয়ার পর আদালত অভিযোগপত্র গ্রহণ করলে গফুর উদ্দিন চৌধুরীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব, বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদনপত্র লিখে দাবি জানান।

এ বিষয়ে নুরুল আলম ঢাকা পোস্টকে বলেন, গফুর উদ্দিন চৌধুরী সরকার বিদ্বেষী লোক। তার সঙ্গে রোহিঙ্গা মাদক কারবারিদের যোগাযোগ রয়েছে। ১৮টি মামলার আসামি এই চেয়ারম্যানের কাছে আমার এলাকার মানুষজন নিরাপদ নয়। তাই জনস্বার্থে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে আবেদন করেছি।

আলোচিত এই জনপ্রতিনিধি দ্বিতীয় মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে সাময়িক বহিষ্কার হওয়াকালীন পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব শরীফা আহমেদ স্বাক্ষরিত এক পরিপত্রে বলা হয়, চেয়ারম্যান গফুর উদ্দিন চৌধুরীর বিরুদ্ধে উখিয়া থানায় করা জিআর মামলা, স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল মামলা ও উখিয়া থানার অপর এক মামলায় দেওয়া অভিযোগপত্র আদালত গ্রহণ করায় সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মামলা বিচারাধীন থাকায় তাকে দিয়ে কোনো প্রকার ক্ষমতা প্রয়োগ জনস্বার্থের পরিপন্থি বলেও ওই পরিপত্রে সেসময় উল্লেখ করা হয়।

সাইদুল ফরহাদ/আরকে