বিশ্ববিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরিয়ে যখন পরিবারের হাল ধরার কথা তখন নিজেই দুরারোগ্য ব্যাধি ফুসফুস ক্যানসারে আক্রান্ত আনোয়ারুল ইসলাম। ইতোমধ্যে বন্ধু-বান্ধব-শিক্ষকদের সহযোগিতায় চিকিৎসা চললেও বর্তমানে পড়েছেন ঘোর অন্ধকারে। অসহায় পরিবার থেকেও কোনো সাহায্যের আশা নেই।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) নৃবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের সাবেক শিক্ষার্থী আনোয়ারুল। তার বাড়ি লালমনিরহাট জেলার আদিতমারী উপজেলায়। বাবা একজন দিনমজুর। বসতভিটার ৩ শতক জমি ছাড়া আর কোনো সম্পত্তি নেই। দুই ভাই ও এক বোনের মধ্যে আনোয়ারুল ছোট।

নিজের পড়াশোনার খরচ জোগাতে টিউশনি আবার কখনো মৌসুমি কাজ করেছেন আনোয়ারুল। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর একটি বেসরকারি ব্যাংক থেকে পাওয়া বৃত্তির টাকা ও টিউশনি করে বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনার খরচ চালিয়েছেন। আনোয়ারুল বর্তমানে রংপুরের একটি ক্যাডেট কলেজের কোচিংয়ে শিক্ষকতার পাশাপাশি চাকরির জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এর মধ্যেই আবারও ফুসফুস ক্যানসারে আক্রান্ত হয়েছেন।

আনোয়ারুল ২০১৯ সালের শুরুর দিকে জানতে পারেন একটি টিউমার তার ফুসফুসের ডান অংশ গ্রাস করেছে এবং এটি দিন দিন আরও বড় হচ্ছে। দ্রুত সার্জারির মাধ্যমে টিউমারটি বের করতে হবে। তার এ সমস্যার কথা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভাগীয় প্রধানকে জানালে তিনি সহযোগিতার আশ্বাস দেন। ২০২০ সালের মার্চে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সহযোগিতায় তিনি ভারতের চেন্নাইয়ের ক্যানসার সেন্টার হাসপাতাল থেকে প্রথম সার্জারি ও ২০২২ সালে দ্বিতীয় সার্জারি করান। এতে ডান পাশের ফুসফুসের বৃহদাংশ কেটে ফেলতে হয়। এরপর অনেকটা ভালোই ছিলেন।

কিন্তু চলতি বছরের ৬ জুলাই জানতে পারেন আবারও ফুসফুসে সংক্রমণ দেখা দিয়েছে তার। দ্রুত ডান ফুসফুস কেটে ফেলতে হবে। এতে প্রয়োজন দশ লক্ষাধিক টাকা। এখন সমাজের বিত্তবানদের কাছে সহযোগিতা চান আনোয়ারুল। বেঁচে থেকে পরিবারের হাল ধরতে চান তিনি।

আনোয়ারুল ঢাকা পোস্টকে বলেন, দরিদ্র পরিবারের সন্তান হওয়ার পরও কখনও হারিনি। নিজে লড়াই করে গেছি। পড়াশোনার খরচ নিজেই জুগিয়েছি। বাবার পক্ষে আমাকে পড়াশোনার খরচ দেওয়া সম্ভব ছিল না। এই অসুস্থতার মধ্যেও টিউশনি করে নিজের খরচ চালাচ্ছি। আমি জীবনযুদ্ধে হারতে চাই না। কিন্তু অর্থের অভাবে এবার হয়ত হেরে যাব। হেরে যাবে আমার ও পরিবারের শত স্বপ্ন।

আনোয়রুল ইসলামের মা মর্জিনা বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে ঢাকা পোস্টকে বলেন, ছেলেটা আমার অনেক দিন ধরে অসুস্থ। কিন্তু ওর জন্য কিছুই করতে পারছি না। ওর বাবা কোমরের ব্যথা নিয়েই গ্রামে কাজ করেন। যা আয় হয় তাতে কোনোরকমে খেয়েপরে আছি। হাতে কোনো টাকাপয়সা নেই। থাকার ঘরের জায়গাটি ছাড়া এক শতক জায়গাও নেই যে বিক্রি করে ছেলেকে চিকিৎসার টাকা দেব। মা-বাবা হয়ে দোয়া করা ছাড়া কিছুই করতে পারছি না।

রাবির নৃবিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি ও সহযোগী অধ্যাপক কামাল পাশা ঢাকা পোস্টকে বলেন, আনোয়ারুল ইসলাম রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী। তিনি অনেক দিন ধরে ফুসফুস ক্যানসারে আক্রান্ত। এর চিকিৎসা ব্যয় প্রচুর। কিন্তু তার পরিবারিক অবস্থা ভালো না হওয়ায় পরিবার থেকে কোনো সহযোগিতা পাচ্ছে না। আমরা সহযোগিতা করছি। সমাজের লোকেরা এগিয়ে এলে তিনি স্বাভাবিক জীবন ফিরে পেতে পারেন।

আনোয়ারুল ইসলামকে সাহায্য পাঠানো যাবে-

বিকাশ: ০১৫১৯৬০৭৩০৮ (পার্সোনাল), রকেট: ০১৭৯৬০৩৭৭৫০ (পার্সোনাল)

ব্যাংক অ্যাকাউন্ট

মো. আনোয়ারুল ইসলাম

সোনালী ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বর ৫২০১৯০১০১৮৭০২

আদিতমারী শাখা, লালমনিরহাট

ব্যাংক অ্যাকাউন্ট

মো. আনোয়ারুল ইসলাম

ডিবিবিএল অ্যাকাউন্ট নম্বর ২৯৪১৫১০০০৭৯৮৫

লালমনিরহাট শাখা

শিপন তালুকদার/এমজেইউ