ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা গোলাম মুর্শেদ বলেছেন, আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে বাংলাদেশকে ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতিতে নিয়ে যাওয়া। আমরা সেই লক্ষ্যেই কাজ করব। দেশে ইন্ডাস্ট্রি তৈরির ক্ষেত্রে যেসব চ্যালেঞ্জ রয়েছে, সেগুলোকে ওভারকাম করাসহ ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে পলিসি মেকারদের কাজ করার ক্ষেত্রগুলোকে আরও মজবুত করাই আমাদের লক্ষ্য।

শুক্রবার (২১ জুলাই) রাতে নারায়ণগঞ্জের ইসদাইরে শামসুজ্জোহা ক্রীড়া কমপ্লেক্সে এফবিসিসিআই'র নির্বাচন (২০২৩-২৫) উপলক্ষ্যে নারায়ণগঞ্জে ব্যবসায়ী ঐক্য পরিষদের প্যানেল পরিচিতি সভায় মাহবুবুল আলম প্যানেলের জন্য ভোট ও দোয়া চাওয়া শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।

আসন্ন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই) নির্বাচনে পরিচালক পদপ্রার্থী গোলাম মুর্শেদ বলেন, দেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে ব্যবসায়ীরা অনেক বড় ভূমিকা পালন করে থাকেন। অর্থনীতির ভিত্তিকে মজবুত করতে দেশে কর্মসংস্থান সৃষ্টিতেও তাদের ভূমিকা অনেক বেশি। সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে দেশের বিভিন্ন খাতকে আরও অগ্রসর করতে প্রতিনিয়তই কাজ করেছেন যাচ্ছেন একঝাঁক উদ্যমী তরুণ।

তিনি বলেন, দেশের অর্থনীতিকে আরও বেগবান করাসহ কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশের পতাকাবাহী পণ্যের প্রসার ঘটাতে ওয়ালটন প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছে। আমাদের অর্থনীতি ক্রমবর্ধমান। তবে বৈশ্বিক মহামারি করোনা ভাইরাস পুরো পৃথিবীর অর্থনীতিতে যে মন্দা নিয়ে এসেছে, সেটা না হলে এতদিনে আমরা কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যের অনেকটা পথ এগিয়ে যেতাম। পুরো সংকটকালীন সময়ে সরকার ব্যবসায়ীদের পাশে ছিল। বিশেষ প্রণোদনা প্যাকেজ, বিভিন্ন পলিসি সাপোর্ট দিয়ে আমাদের সহযোগিতা করা হয়েছে। যেটা এদেশের ইন্ড্রাস্ট্রিজগুলোর জন্য একবারেই পরিহার্য্য ছিল। সংকটের মধ্যেও টিকে থাকা এবং অর্থনীতিকে সচল রাখার যে পরিকল্পনা ছিল সেটাও ব্যবসায়ীদের দূরদর্শিতা।

আসন্ন এফবিসিসিআই নির্বাচনে মাহবুবুল আলম প্যানেলের মূল লক্ষ্য কি? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি আগেই বলেছি, আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে বাংলাদেশকে ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতিতে নিয়ে যাওয়া। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে ব্যবসায়ীরা যাতে নেতৃত্ব দিতে পারেন, সেজন্য আমাদের প্যানেল কাজ করবে। এজন্য বিজ্ঞ, প্রবীণ ও নতুনদের নিয়ে আমাদের প্যানেল সাজানো হয়েছে। এ প্যানেল নির্বাচিত হলে আমরা এফবিসিসিআইয়ে নতুন ধারা দেখতে পাব।

দেশের বেকারত্ব নিরসন ও কর্মসংস্থান বাড়ানোর বিষয়ে গোলাম মুর্শেদ বলেন, আমরা ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতিতে পরিণত হলে আমাদের কর্মসংস্থান বাড়বে তিনগুণ। যা বর্তমান সময়ের চেয়ে জিডিপিতে আরও বেশি অবদান রাখতে সক্ষম হবে। একইসাথে দেশে বেকারত্ব নিরসনও হবে। ইতোমধ্যেই বাংলাদেশ স্মার্ট যুগে প্রবেশ করেছে। আমাদের দক্ষ ও স্মার্ট কর্মী প্রয়োজন হবে। ফলে এ উন্নয়নশীল খাতে উদ্যমী উদ্যোক্তার পাশাপাশি কর্মীরা কাজের সুযোগ পাবেন। সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে ইলেক্ট্রনিক্স ইন্ডাস্ট্রির উন্নয়নকে আরও ত্বরান্বিত করতে চাই। বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশের পতাকাবাহী পণ্যের প্রসার ঘটাতে কাজ করতে চাই। এখানে যে প্রতিবন্ধকতাগুলো রয়েছে যেগুলো চিহ্নিত করে সমাধান করতে চাই।

ব্যবসায়ীদের উন্নয়নে এ প্যানেলের সবাই প্রতিজ্ঞাবদ্ধ দাবি করে তিনি বলেন, এখানে আমরা সবাই কাজ করার আগ্রহ নিয়ে এসেছি। বাংলাদেশে সাড়ে চার কোটি ব্যবসায়ী আছেন। সবার জন্য আমরা কাজ করব। ব্যবসা ও জনগণ একে অপরের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। কাউকে ছেড়ে কাউকে চিন্তা করা যাবে না, ব্যবসা যখন ভালো থাকবে জনগণ ভালো থাকবে। জনগণ বাঁচলে ব্যবসা বাঁচবে। সামগ্রিকভাবে দেশের অর্থনীতি বেগবান হবে।

বিকেএমইএ-এর আয়োজনে ও এফবিসিসিআই-এর সার্বিক তত্বাবধানে প্যানেল পরিচিতি সভাটি অনুষ্ঠিত হয়। 

বিকেএমইএ-এর সভাপতি ও নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য একেএম সেলিম ওসমানের সভাপতিত্বে প্যানেল পরিচিতি সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা এবং ঢাকা-১ আসনের সংসদ সদস্য সালমান এফ রহমান। এছাড়া বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআই-এর সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন, সিসিসিআই সভাপতি ও এফবিসিসিআই ব্যবসায়ী ঐক্য পরিষদের নির্বাচনের প্যানেল প্রধান মাহাবুবুল আলম ও এফবিসিসিআই-এর সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ আলী।

আবির শিকদার/এফকে