নওগাঁয় পুলিশ-বিএনপি সংঘর্ষ, আটক ২০
নওগাঁয় পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনায় ২০ জনকে আটক করা হয়েছে। সংঘর্ষে পুলিশসহ অর্ধশতাধিক আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে শহরের কেডির মোড় এলাকায় বিএনপির দলীয় কার্যালয়ের সামনে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ জানায়, পুলিশের গুলিতে হেফাজত কর্মীদের নিহতের ঘটনার প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে দুপুর ১২টার দিকে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক হাফিজুর রহমানের নেতৃত্বে দলীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করার চেষ্টা করেন বিএনপির নেতাকর্মীরা।
বিজ্ঞাপন
এ সময় পুলিশ তাদের বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ ও বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে ধস্তাধস্তি শুরু হয়। একপর্যায়ে লাঠিচার্জ শুরু করলে বিএনপির নেতাকর্মীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়।
এ ঘটনার দুই-তিন মিনিট পর বিএনপির নেতাকর্মীরা আবারও জড়ো হয়ে দলীয় কার্যালয়ের পূর্ব দিক থেকে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছুড়তে থাকে। পরিস্থিতি নিযন্ত্রণে পুলিশ টিয়ারশেল, রাবার বুলেট ও ফাঁকা গুলি ছোড়ে। অন্তত ২০ মিনিট ধরে সংঘর্ষে পুলিশসহ অর্ধশতাধিক আহত হন। এ সময় ২০ জনকে আটক করে পুলিশ।
সংঘর্ষের সময় ব্রিজের মোড়, কলেজ মোড় সড়ক ও কেডির মোড় সড়ক দিয়ে গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে নওগাঁ সদর থানা ও পুলিশ লাইনস থেকে অতিরিক্ত পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হলে বিএনপির নেতাকর্মীরা রাস্তা ছেড়ে দেন।
জেলা বিএনপির আহ্বায়ক হাফিজুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে আমরা দলীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করার চেষ্টা করি। কিন্তু পুলিশ কোনো কারণ ছাড়াই বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর লাঠিচার্জ শুরু করে। বিএনপির নেতাকর্মীরা কেডির মোড় এলাকা থেকে দলীয় কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিলে সেখানে পুলিশ টিয়ারশেল, রাবার বুলেট ও গুলি ছোড়ে। এতে আমিসহ দলের অন্তত ৩০-৪০ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছি। পুলিশের গুলিতে গুরুতর আহত জেলা যুবদলের যুগ্ম সম্পাদক কোহিনুর ইসলাম মিলি ও জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক আজিজুল ইসলামকে আশঙ্কাজনক রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। অন্যদের নওগাঁ সদর হাসপাতলসহ বিভিন্ন ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে।
নওগাঁর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রকিবুল আক্তার বলেন, অনুমতি ছাড়াই বিএনপির নেতাকর্মীরা মিছিল বের করার চেষ্টা করেন। ব্যস্ততম সড়ক দিয়ে মিছিল নিয়ে চেষ্টা করলে তাদের বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে পুলিশ। এ সময় বিএনপির কর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছুড়তে থাকে। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশও টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট ছোড়ে। বিএনপির কর্মীদের হামলায় ছয়-সাতজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম ধলু ঢাকা পোস্টকে বলেন, সংঘর্ষের পর দুপুর ২টার দিকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রকিবুল আক্তারের নেতৃত্বে নওগাঁ শহরের তাজের মোড় এলাকার অন্বেষা নিশান ক্লাবে অভিযান চালিয়ে ছয়জনকে আটক করে পুলিশ। এর আগে আরও ১৪ জনকে আটক করা হয়।
শামীনূর রহমান/এএম