খুলনায় বিএনপির কার্যালয়ের সামনে পুলিশ

খুলনায় পুলিশের বাধায় বিএনপির প্রতিবাদ সমাবেশ পণ্ড হয়ে গেছে। সোমবার (২৯ মার্চ) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে দলীয় কার্যালয়ের নিচে এ সমাবেশ শুরু হলে পুলিশ লাঠিচার্জ করে নেতাকর্মীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। 

পুলিশের লাঠিচার্জে নগর বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক নজরুল ইসলাম বাবুসহ ৯ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন মহানগর বিএনপির নেতারা।

তবে পুলিশের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে-  বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর কোনো লাঠিচার্জ করা হয়নি, শুধু ধাওয়া দেওয়া হয়েছে। ধাওয়া খেয়ে কার্যালয়ে উঠতে গিয়ে অনেকে পড়ে আহত হয়েছেন।

স্বাধীনতা দিবসে ‘মানুষ হত্যার’ প্রতিবাদে বিএনপির কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে খুলনা মহানগর ও জেলা বিএনপি এ প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করে। সকালে পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচিতে অংশ নিতে নেতাকর্মীরা দলীয় কার্যালয়ের সামনে উপস্থিত হতে থাকেন। পুলিশ তাদের স্থান ত্যাগ করতে বললে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় পুলিশ লাঠিচার্জ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।   

খুলনা মহানগর বিএনপির সহ-দফতর সম্পাদক সামছুজ্জামান চঞ্চল ঢাকা পোস্টকে বলেন, পুলিশের লাঠিচার্জে বিএনপির ৯ জন নেতাকর্মী গুরুতর আহত হয়েছেন। আহতরা হলেন নগর বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক নজরুল ইসলাম বাবু, বটিয়াঘাটা থানা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক খন্দকার ফারুক হোসেন, ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের সহ-সভাপতি বাবুল হোসেন গাজী, জেলা বিএনপির সদস্য আব্দুল হালিম, কাজী ফজলুল কবির টিটো, স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য আলাউদদ্দিন তালুকদার, বটিয়াঘাটা থানা বিএনপির সদস্য মোতাহার হোসেন, ১৪ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির নেতা মিজানুর রহমান মিজান ও নগর যুবদল নেতা শফিকুল ইসলাম শাহিন। এ ঘটনার পর দলীয় কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিং করা হয়েছে।

দুপুরে প্রেস ব্রিফিংয়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম মঞ্জু  অভিযোগ করেন, কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে দলীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করার কথা ছিল। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে দলীয় কার্যালয়ের সামনে যখন নেতাকর্মীরা শৃঙ্খলাবদ্ধভাবে সমাবেশের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তখন পুলিশ তাদেরকে বাধা দেয়। এ সময় তিনিসহ দলের জ্যেষ্ঠ নেতারা পুলিশের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলতে চাইলে পুলিশ তাদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করে। পরে পুলিশ নেতাকর্মীদের ওপর অতর্কিত লাঠিচার্জ করলে কয়েকজন আহত হন।   

তিনি আরও বলেন, বিনা উসকানিতে পুলিশ বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালিয়ে বেধড়ক লাঠিচার্জ করেছে। এতে অসংখ্য নেতাকর্মী রক্তাক্ত জখম হয়েছে। শান্তির শহর খুলনাতে গণতন্ত্রকামী নিরীহ নেতাকর্মীদের ওপর বিনা উসকানিতে অতর্কিত লাঠিচার্জ গণতন্ত্রের জন্য শুভ লক্ষণ নয়। হামলা নির্যাতন করে বিএনপি নেতাকর্মীদের মনোবল ভাঙা যাবে না। আন্দোলনের মধ্যে দিয়েই এই সরকারের পতন ঘটিয়ে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে।  

এ সময় খুলনা জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট শফিকুল আলম মনাসহ নগর ও জেলা বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল, মহিলা দলসহ অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। 

খুলনা সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশরাফুল আলম বলেন, অনুমতি না নিয়ে রাস্তা অবরোধ করে সমাবেশ করার চেষ্টা করছিলেন বিএনপি নেতাকর্মীরা। এ সময় তাদের রাস্তা ছেড়ে দিয়ে কার্যালয়ের মধ্যে গিয়ে সমাবেশ করার কথা বলা হয়। পরে কার্যালয়ে ওঠার সময় নেতাকর্মীরা পুলিশকে উদ্দেশ্য করে গালিগালাজ করতে থাকেন। তখন পুলিশ তাদের ধাওয়া করে। এ সময় তড়িঘড়ি করে ছোট সিঁড়ি দিয়ে ওপরে উঠতে গিয়ে অনেকেই আহত হয়েছেন। পুলিশ বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর লাঠিচার্জ করেনি বলে দাবি করেন তিনি।

মোহাম্মদ মিলন/আরএআর