রাজশাহীতে ১৪ বছর পর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন মামলার দুই পলাতক আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শনিবার (২৪ জুন) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে নিজ কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে রাজশাহীর পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ এ তথ্য জানান। 

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- মৃত হাবিল উদ্দিনের ছেলে মফিজ উদ্দিন (৭৫) এবং মৃত মকছেদ খোরার ছেলে খেতাব (৮০)। তারা রাজশাহীর চারঘাটের কালুহাটি এলাকার বাসিন্দা। 

পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন জানান, ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শুক্রবার (২৩ জুন) দিবাগত রাতে চারঘাট মডেল থানা পুলিশ গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে। তাদের বিরুদ্ধে ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে চারঘাট মডেল থানায় ২০০৯ সালের ৪ এপ্রিল গোলাম হোসেন নামে এক ব্যক্তি  ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। এই মামলার তিন আসামি মারা গেছেন। একজন পলাতক রয়েছেন  এবং দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। 

এ সময় রাজাকার খেতাব এবং মফিজের নৃশংসতার কিছু বর্ণনা দেন পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন। 

তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন চারঘাট থানা এবং সংলগ্ন এলাকায় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সহযোগিতায় রাজাকার খেতাব, মফিজ এবং তাদের অন্যান্য সহযোগীরা ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল। মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগিতা এবং আওয়ামী লীগের রাজনীতি করার কারণে এরা অনেকের বাড়িঘর পুড়িয়ে দিয়েছিল। নৃশংসভাবে মুক্তিকামী মানুষকে হত্যা করেছিল। ওপরে উল্লেখিত মামলার বাদী চারঘাট থানার কালুহাটি গ্রামের গোলাম হোসেনের বাবা শহিদ রওশন আলী সরকার এবং পার্শ্ববর্তী রোস্তমপুর গ্রামের কলিম উদ্দিনকে এদের সহযোগিতায় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী আটক করে বিবস্ত্র করে গাড়ির পেছনে বেঁধে নৃশংসভাবে হত্যা করেছিল। এর পাশাপাশি বাদী এবং তাদের প্রতিবেশী অনেকের বাড়িঘর আগুনে পুড়িয়ে নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছিল। 

পুলিশ সুপার জানান, আসামিদের রাজশাহীর বিজ্ঞ আদালতের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যানালে হস্তান্তর করার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। 

প্রেস ব্রিফিংয়ে রাজশাহী জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

শাহিনুল আশিক/আরএআর