জন্মদিনে বন্ধুর হাত-পা বাঁধলেন ৬ সহপাঠী
জন্মদিন এলেই কেক কেটে উৎসব পালন করার রেওয়াজ দীর্ঘ দিনের। আর সেই জন্মদিন যদি হয় তরুণ বা কিশোর বয়সী বন্ধুর, তাহলে আনন্দ উৎসবের কোনো কমতি থাকে না। হইহুল্লোড়, চিৎকার ও গান-বাজনা তখন নিয়মিত বিষয় হয়ে দাঁড়ায়।
কিন্তু এবার দশম শ্রেণির এক ছাত্রের ১৭তম জন্মদিন পালন করা হয় ব্যতিক্রমী কায়দায়। সহপাঠী ৬ বন্ধু প্রকাশ্যে আরাফাত হোসেন নামে ওই বন্ধুকে গাছের সঙ্গে বেঁধে শরীরে কাদামাটি, আটা-ময়দা ও রং মাখিয়ে উল্লাস করে।
বিজ্ঞাপন
রোববার (২৮ মার্চ) এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পাওয়া গেছে। জন্মদিনের এই উৎসবকে প্রত্যক্ষদর্শীদের কেউ কেউ বলেছেন, সন্ত্রাসী কায়দায় এমন উৎসব করা ঠিক নয়। আবার কেউ বলেছেন, কিছু সময় আনন্দ পাওয়ার জন্য হয়তো তারা জন্মদিনের এমন উৎসব করে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, নাটোরের সিংড়া উপজেলার দমদমা পাইলট স্কুল অ্যান্ড কলেজের দশম শ্রেণির ছাত্র আরাফাত রোববার তার জন্মদিনের কথা ৬ বন্ধু হৃদয়, শাকিল, ইরান, সোহান, মাহিন ও সিহাবকে জানায়। আনন্দ করতে তারা আরাফাতের জন্মদিন ভিন্ন আঙ্গিকে করার সিদ্ধান্ত নেয়।
ওই উৎসব যেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়— এমন ইচ্ছা নিয়ে তারা সিদ্ধান্ত নেয় ব্যতিক্রমী কায়দায় জন্মদিন পালনের। সকালে উপজেলা পরিষদ চত্বরের সামনে গাছে আরাফাতকে রশি দিয়ে বেঁধে তার শরীরে ময়দা, ডিম, ময়লা-অবর্জনাসহ রং মাখানো হয়। এ সময় আরাফাতকেও আনন্দ করতে দেখা যায়।
জন্মদিনের এই উৎসব ভিডিওধারণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে সচেতন নাগরিক ও অভিভাবক মহল বিষয়টিকে স্বাভাবিকভাবে নেননি।
ফারহানা ফ্লোরা নামে এক অভিভাবক জানান, এটা মজা না, সামাজিক অবক্ষয়। এদেরকে এখনই থামাতে হবে। মাজেদুর রহমান ও মেহেদি হাসান নামে দুজন সচেতন ব্যক্তি বলেন, এমন কর্মকাণ্ড প্রমাণ করে সুস্থ মস্তিষ্কের বড়ই অভাব।
মানবাধিকার ও গণমাধ্যমকর্মী এনামুল হক বাদশা বলেন, উৎসবের নামে এ ধরনের কর্মকাণ্ড অত্যন্ত দুঃখজনক। এটা চরম সামাজিক ও নৈতিক অবক্ষয়। এমন কর্মকাণ্ড থেকে নতুন প্রজন্মকে বিরত থাকতে হবে। তবেই সুন্দর ও শিক্ষিত সমাজ গড়ে তোলা সম্ভব।
অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া আরাফাতের ৬ বন্ধু বলেন, তারা মূলত বন্ধুর ১৭তম জন্মদিন স্মরণীয় করে রাখার জন্যই এমন ব্যতিক্রমী আয়োজন করেছেন। কোনো বাজে উদ্দেশ্য নিয়ে তারা এমনটি করেননি।
তাপস কুমার/এমএসআর