গরুটির নাম রেখেছেন ফটিক চাঁন। ওজন ৩৫ মণ। আকারে দানব আকৃতি হওয়ায় সহজেই নিয়ে যেতে পারছেন না কোরবানির পশু হাটে। এদিকে বাড়িতে ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন জায়গা থেকে এলেও আকার দেখে অধিকাংশ ব্যবসায়ী দাম না করেই ফিরে যাচ্ছেন। ফলে গরু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন খামারি দেলোয়ার হোসেন।

দেলোয়ার হোসেনের বাড়ি রংপুরের পীরগাছা উপজেলার অন্নদান নগর ইউনিয়নের পঞ্চানন্দ গ্রামে। তিনি কৃষিকাজ করার পাশাপাশি গরু পালন করেন। গরুটির দ্রুত বৃদ্ধি দেখে সাড়ে চার বছর থেকে বাড়িতে লালন পালন করেছেন। এখন সেটির ওজন হয়েছে ৩৫ মণ। তিনি গরুটির দাম হাঁকছেন ১৭ লাখ টাকা। তবে দরদাম করে গরুটি নেওয়া যাবে।

খামারি দেলোয়ার হোসেন জানান, গরুটি ফ্রিজিয়ান জাতের। সাড়ে চার বছর থেকে বাড়িতেই লালন-পালন করছি। গরুটিকে ভুসি, দানাদার খাবার ও জাও খায়াচ্ছি। গত বছর গরুটির দাম উঠেছিল ৫ লাখ টাকা। দাম পছন্দ না হওয়ায় বিক্রি করিনি। এ বছর গরু ব্যবসায়ীরা গরুটি দেখে দাম না করেই ফিরে যাচ্ছেন।

তিনি আরও জানান, অত্র এলাকার মধ্যে আমার গরুটি সবথেকে বড়। গরু নিয়ে খুবই দুঃচিন্তায় আছি। প্রতিদিন খাবার বাবদ প্রায় এক হাজার টাকা ব্যয় করতে হচ্ছে। আর সাড়ে চার বছরে খরচ হয়েছে প্রায় সাত-আট লাখ টাকা। গরু বিক্রি না হলে সমস্যায় পরে যাব।

দেলোয়ার হোসেনের স্ত্রী জানায়, গরুটা তাড়াতাড়ি বেচতে পারলে অনেক উপকার হতো। হামার ঘর-দুয়ারের অবস্থা ভালো না। গরুটাক টিনের চালায় রাখছি। গরুটা বেচপের পারলে ঐ টাকা দিয়ে নতুন বাড়ি-ঘর করমো।

রংপুর জেলার পীরগাছা ইউনিয়নের অন্যদান নগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম বলেন আমি দেলোয়ার হোসেনের গরুটির বিষয়ে জানি। এটি এলাকার বড় গরু। গরুটি বিক্রির জন্য সবাই সহযোগিতা করবেন।

রংপুর পীরগাছা উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. আব্দুস সালাম বলেন, ওই এলাকায় অনেকগুলো খামার আছে। কেউ গরু বিক্রি করতে পারছে না, এ তথ্য আমার জানা ছিল না। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে আমরা গরু বিক্রি করতে সহযোগিতা করব।

প্রসঙ্গত, এ বছর রংপুর বিভাগে কোরবানির উপলক্ষ্যে ১৩ লাখ ৭০ হাজার গরু ও খাসি প্রস্তুত রয়েছে। যা এ অঞ্চলের চাহিদা মিটিয়েও প্রায় তিন লাখের মতো অতিরিক্ত পশু থাকবে বলে জানিয়েছে রংপুর বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ দপ্তর। গতবছর কোরবানি উপলক্ষ্যে এ অঞ্চলে ১৩ লাখ গরু-খাসি প্রস্তুত থাকলেও চাহিদা মিটিয়ে আড়াই লাখের বেশি অতিরিক্ত পশু ছিল।

শিপন তালুকদার/আরকে