৩৫ মণ ওজনের ডলারের দাম ২৫ লাখ
প্রতি বছর ঈদুল আজহার আগ মুহূর্তে নানা আকৃতি ও দামে আলোচনায় আসে বাহারি নামের গরু ও ছাগল। এবার সেই তালিকায় যুক্ত হয়েছে ‘ডলার’ নামের একটি গরু।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আমেরিকান ব্রাহমা ও ব্রাঙ্কাস প্রজাতির ৩৫ মণ ওজনের ষাঁড়টি বিশেষভাবে পালন করছেন সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার সয়দাবাদ ইউনিয়নে প্রতিষ্ঠিত আরাভ অ্যাগ্রো নামের একটি খামার। ষাঁড়টির দাম হাঁকা হচ্ছে ২৫ লাখ টাকা।
বিজ্ঞাপন
ডলারের উচ্চতা প্রায় ৬ ফুট, দৈর্ঘ্য সাড়ে ৯ ফুট ও প্রস্থ প্রায় ৩ ফুট। ডলারের সেবায় নিয়োজিত আছে খামারের ৯ জন শ্রমিক। শ্রমিকরা ডলারকে সময়মতো তিনবেলা গোসল করানো থেকে শুরু করে খাবার খাওয়ানোর কাজ করে থাকেন। তাকে সবুজ ঘাস ও দানাদার খাবার খাওয়ানো হয়। এছাড়া মৌসুমি ফলও রয়েছে তার খাবারের তালিকায়।
আরাভ অ্যাগ্রো ফার্মের ব্যবস্থাপক আলমগীর হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, কোরবানির জন্য জেলায় বেড়ে ওঠা অসংখ্য ষাঁড়ের মধ্যে সবার নজর কেড়েছে ‘ডলার’। ষাঁড়টিকে দেখতে প্রতিদিন খামারে ভিড় করছেন উৎসুক জনতা। ক্রেতাদের পাশাপাশি দূরদূরান্ত থেকেও অনেকে দেখতে আসছেন ডলারকে। ডলার সিরাজগঞ্জ জেলার সবচেয়ে বড় গরু।
আরাভ অ্যাগ্রো ফার্মের মালিক জাহিদ হাসান জেমি ঢাকা পোস্টকে বলেন, নাটোর থেকে ৯ মাস আগে ডলারকে কিনে এনে লালনপালন করা হচ্ছে। ডলারকে প্রতিদিন প্রায় ১ হাজার ৭০০ টাকার খাবার খাওয়াতে হয়। বিশেষ জাতের এই ষাঁড়টির দাম হাঁকা হচ্ছে ২৫ লাখ টাকা। তবে এখন পর্যন্ত ২০ লাখ টাকার মতো দাম বলেছেন গ্রাহক। শেষ পর্যন্ত হয়ত একটু কমবেশি করে বিক্রি করে দেব।
তিনি আরও বলেন, এর আগে বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ প্রদর্শনীতে ডলারকে তোলা হয়েছিল। তখন ডলার দেশের দ্বিতীয় ও জেলার সবচেয়ে বড় গরু হিসেবে পুরস্কার পায়। বিভিন্ন এলাকা থেকে গরুর ব্যবসায়ীরা এসে ডলারের দরদাম করছে। খামার থেকে বিক্রি না হলে হাটে তোলা হবে।
জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, জেলার ৯ উপজেলায় প্রায় ১৭ হাজার ছোট বড় খামারি ও কৃষক বিভিন্ন প্রজাতির গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়া মোটাতাজা করছেন। এতে ঈদ উপলক্ষ্যে খামারে ৩ লাখ ৮৬ হাজার ৩৯৬টি গবাদিপশু মোটাতাজা করা হয়েছে। এর মধ্যে ষাঁড় ১ লাখ ৭১ হাজার ৭১২টি, মহিষ ১ হাজার ৪০৫টি, ছাগল ১ লাখ ৫৫ হাজার ও ভেড়া ৬১ হাজার ১৩৩টি। এ জেলায় কোরবানির জন্য পশুর চাহিদা ১ লাখ ৬০ হাজার। এই চাহিদা মিটিয়ে ২ লাখ ২৬ হাজার ৩৯৬টি পশু সারা দেশে যাবে।
সিরাজগঞ্জ জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা গৌরাংগ কুমার তালুকদার ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমেরিকান ব্রাঙ্কাস জাতের ষাঁড় ‘ডলারকে’ বিভিন্ন রোগের টিকাসহ প্রাণিসম্পদ অফিস থেকে তদারকি করা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, জেলার সকল খামারে গিয়ে প্রাণিসম্পদ বিভাগের লোকজন নিয়মিত পরামর্শ প্রদান করে আসছেন। অনলাইন হাটের মাধ্যমে কৃষক ও খামারিদের পশু ক্রয়-বিক্রয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সকল খামারিকে এর জন্য উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।
শুভ কুমার ঘোষ/এমজেইউ