সীমানা জটিলতায় আবারও স্থগিত মঠবাড়িয়া পৌর নির্বাচন
সীমানা জটিলতায় পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া পৌরসভার নির্বাচন আবারও স্থগিত করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ইসি সচিবালয়ের নির্বাচন পরিচালনা-২ অধিশাখার উপসচিব মো. আতিয়ার রহমান স্বাক্ষরিত চিঠিতে এ তথ্য জানা যায়।
রোববার (১৮ জুন) বিকেলে মঠবাড়িয়া পৌর নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে এ সংক্রান্ত চিঠি এসে পৌঁছায়।
বিজ্ঞাপন
গত ৩১ মে মঠবাড়িয়া পৌর নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। ঘোষিত তফসিলে আগামী ১৭ জুলাই ভোট গ্রহণের দিন ধার্য ছিল। শেষ ২০১১ সালের ১৩ জানুয়ারি মঠবাড়িয়া পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এরপর সীমানা সম্প্রসারণসংক্রান্ত রিটের জেরে হাইকোর্টের স্থগিতাদেশের কারণে নির্বাচন হয়নি।
নির্বাচন কমিশন থেকে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, মঠবাড়িয়া পৌরসভার সীমানা সম্প্রসারণসংক্রান্ত ২০১৩ সালের ২৯ এপ্রিল প্রকাশিত গেজেটকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করা হয়েছিল। শেষ ২০২২ সালের ২৫ অক্টোবর ওই গেজেট নোটিফিকেশন রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচন স্থগিত করেছেন আদালত। আদালতের আদেশের কারণে মঠবাড়িয়া পৌরসভার বর্ধিত সীমানায় নির্বাচন করার সুযোগ নেই। এ কারণে কমিশন মঠবাড়িয়া পৌরসভার ঘোষিত তফসিল স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও মঠবাড়িয়া উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. নাজমুল হোসেন বলেন, মঠবাড়িয়া পৌরসভার মেয়র, কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে নির্বাচনের মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন ছিল রোববার। বিকেল ৪টার মধ্যে মেয়র পদে সাত প্রার্থীসহ কাউন্সিলর প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এরপর নির্বাচন কমিশন থেকে নির্বাচন স্থগিতের চিঠি পৌঁছায়। ফলে নির্বাচনের সব কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে।
মঠবাড়িয়া পৌরসভা সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৩ সালের ১ জুন মঠবাড়িয়া পৌরসভা প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৯৯ সালে অনুষ্ঠিত প্রথম নির্বাচনে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রফিউদ্দিন আহমেদ পৌরসভার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। এরপর ২০০৪ ও ২০১১ সালে তিনি পুনর্নির্বাচিত হন। ২০১৩ সালে মঠবাড়িয়া পৌরসভা সীমানা সম্প্রসারণের উদ্যোগ নিলে উপজেলার দক্ষিণ মিঠাখালী গ্রামের মো. ওহাব মাতুব্বর হাইকোর্টে একটি রিট পিটিশন দাখিল করেন। ওই বছরের ৩১ জুলাই হাইকোর্ট সীমানা সম্প্রসারণের কাজে তিন মাসের স্থগিতাদেশ দেন। এরপর বিভিন্ন সময় স্থগিতাদেশের মেয়াদ বাড়িয়েছেন আদালত। শেষ ২০২২ সালের ২৫ অক্টোবর হাইকোর্ট স্থগিতাদেশের রুল দ্রুত নিষ্পত্তির নির্দেশ দেন।
পরে ২০১৬ সালের ৯ মে পৌর পরিষদের মেয়াদ শেষ হলেও আদালতের স্থগিতাদেশের কারণে নির্বাচন করা সম্ভব হয়নি। ২০২২ সালের ২৭ এপ্রিল পৌর পরিষদকে বিলুপ্ত করে তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) প্রশাসক নিয়োগ দেয় স্থানীয় সরকার বিভাগ। ওই বছরের ১৪ নভেম্বর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আজিজুল হক মাতুব্বর পৌর প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ পান। শেষ এ বছরের ১৫ মে উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আরিফ উল হক পৌরসভার প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন।
আবীর হাসান/আরকে