আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পাওয়ায় দলীয় পদ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন পটুয়াখালীর দুমকী উপজেলা আওয়ামী লীগের ১নং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. দেলোয়ার হোসেন মোল্লা। শনিবার (১৭ জুন) সকালে নিজ গ্রামের বাড়িতে স্থানীয় কর্মী-সমর্থকদের সামনে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ ঘোষণা দেন। 
 
দেলোয়ার হোসেন মোল্লা আক্ষেপ করে বলেন, আওয়ামী লীগে হামলা, মামলা, জেল-জুলুম নির্যাতন ভোগের কোনো মূল্যায়ন নেই। নব্য হাইব্রিডদের অবৈধ অর্থের কাছে আজ দীর্ঘদিনের পরীক্ষিত ত্যাগী নেতাকর্মীরা অসহায়। আওয়ামী লীগের পদ-পদবি যেখানে টাকায় বিক্রি হয়, সেই সংগঠনে আমার মতো নিঃস্বার্থ ত্যাগী কর্মীদের রাজনীতি করার কোনো সুযোগ নেই। পদে পদে লাঞ্ছনা, গঞ্জনা, বঞ্চনা ও অপমান অপদস্ত হওয়ার চেয়ে আত্মসম্মান বাঁচাতে আগে ভাগেই সরে যাওয়া শ্রেয়। তাই আমি দুমকী উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে পদত্যাগ করছি।

উপজেলার লেবুখালী ইউপি নির্বাচনে প্রার্থী হবেন কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ইউনিয়নবাসী চাইলে অবশ্যই নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবো।

এ বিষয়ে দুমকী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল কালাম আজাদ বলেন, মৌখিকভাবে শুনেছি, এখনো পদত্যাগপত্র আমাদের হাতে পাইনি। এটা হয়ে থাকলে তা খুবই দুঃখজনক। আমরা ইউনিয়ন কমিটির বিশেষ বর্ধিত সভায় সমঝোতার মাধ্যমে প্যানেল তৈরি করে পাঠিয়েছি। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ। সেখানে আমার বা কারও কিছু বলার নেই।  

জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কাজী আলমগীর হোসেন বলেন, পদত্যাগের কোনো কাগজপত্র পাইনি। মনোনয়নের ব্যাপারে দেলোয়ারের নাম সম্মানের সঙ্গে কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে। সুপারিশপত্রও দেওয়া হয়েছিল। তিনি মনোনয়ন পাননি। এখানে আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ সঠিক নয়। 

পদত্যাগের বিষয়ে তিনি বলেন, কেউ যদি স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করে তাকে তো আর জোড় করার কিছু নেই। মনোনয়ন না পাওয়ায় মনগড়া অভিযোগ করছেন দেলোয়ার।   

প্রসঙ্গত, পটুয়াখালীর দুমকী উপজেলার লেবুখালী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে দ্বিতীয় বারের মতো দলীয় মনোনয়ন চান উপজেলা আওয়ামী লীগের ১নং যুগ্মসাধারণ সম্পাদক মো. দেলোয়ার হোসেন মোল্লা। ২০১৮ সালের ইউপি নির্বাচনে তিনি প্রার্থী হয়েছিলেন। তৎকালীন দলীয় নেতাকর্মী, উপজেলা, জেলা ও কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের প্রতিশ্রুতি ও আশ্বাসে ওই সময় তার প্রার্থিতা প্রত্যাহার করলে নৌকার প্রার্থী শাহ আলম আকন চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। শাহআলম আকনের মৃত্যুর পর এবার তার ছেলে উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম তুহিন দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন। 

মাহমুদ হাসান রায়হান/আরএআর