শরীয়তপুরের জাজিরায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে দুই শতাধিক ককটেল বিস্ফোরণ হয় ও দুই গ্রুপের অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। শুক্রবার (১৬ জুন) বিকেলে জাজিরা উপজেলার সেনের চর ইউনিয়নের পশ্চিম সেনের চর ৪নং ওয়ার্ডে এই সংঘর্ষ হয়। 

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, জাজিরার পশ্চিম সেনের চরের ৪নং ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার জাহাঙ্গীর সিকদারের (৫৫) সঙ্গে ঢালী কান্দির বালু ব্যবসায়ী রিপন ঢালী ও আল ইসলাম খানের আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। এরই অংশ হিসেবে শুক্রবার রিপন ঢালীর চাচাতো ভাইয়ের ছেলে মানিকের সঙ্গে ঘুল্লার বাজার এলাকায় কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে জাহাঙ্গীর সিকদারের লোকজনের সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয়। এর কিছুক্ষণ পর রিপন ঢালী ও আল ইসলাম খানের লোকজন দেশীয় অস্ত্র, লাঠিসোঁটা ও ককটেল নিয়ে জাহাঙ্গীর সিকদারের বাড়িতে হামলা করে। এসময় উভয় পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্র, লাঠিসোঁটা ও ককটেল নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়লে ককটেল বোমার বিস্ফোরণে সিকদার গ্রুপের জাহাঙ্গীরসহ শাজাহান সিকদার (৭০), আ: রব সিকদার (৭৫), জিসান সিকদার (২০) আহত হন। স্থানীয় লোকজন আহতদের জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে এলে শাজাহান সিকদারকে ভর্তি করা হয় এবং বাকি তিনজনের অবস্থা গুরুতর হলে তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

অপরদিকে ওই  হামলায় রিপন ঢালী গ্রুপের জিয়াউর ঢালী (৪৫), বাবুল ঢালী (৪০), শিপন ঢালী (২৩), সিয়াম ঢালী (১৫), মোশারফ সরদার (৩৮), আহত হলে স্থানীয় লোকজন তাদের শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে এলে জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাদের ভর্তি করেন। এছাড়া দুই গ্রুপের সদস্যদের আহত অবস্থায় বাড়িতে ও মাদারীপুরে চিকিৎসাধীন আছে।

জাহাঙ্গীর সিকদারের স্ত্রী পারুল আক্তার জানান, বাজারে কি হয়েছে তা আমরা জানি না। হঠাৎ বোমার শব্দ পাই। আমার স্বামী ঘর থেকে বের হলে তার দিকে বোমা নিক্ষেপ করে রিপন ঢালী ও তার লোকজন। এ সময় কমপক্ষে দুই শতাধিক বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। তখন গুরুতর আহত হয় আমার স্বামী, ভাসুর, ভাসুরের ছেলেসহ আরও অনেকে।

এ বিষয়ে জানতে রিপন ঢালীর সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয় এবং তার মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি। তবে তার ঘনিষ্ঠ আল ইসলাম খান মুঠোফোনে বলেন, ঘুল্লার বাজারে অবস্থিত তাদের একটি দোকানে লুটপাট চালিয়েছে জাহাঙ্গীর সিকদারের লোকজন এ নিয়ে মূলত গ্যাঞ্জাম করে।

জাজিরা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনা শোনার পর সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এই ঘটনায় এখনো কোনো পক্ষের লিখিত অভিযোগ পাইনি। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সাইফুল ইসলাম সাইফ রুদাদ/আরকে