জামালপুরে সাংবাদিক নাদিম হত্যার ঘটনায় আটক ৩
জামালপুরের বকশীগঞ্জে সাংবাদিক গোলাম রব্বানী নাদিমকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) সন্ধ্যায় বকশীগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহেল রানা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তবে আটকদের নাম-পরিচয় প্রকাশ করেননি ওসি।
জানা গেছে, গতকাল বুধবার (১৪ জুন) রাত সাড়ে ১০টার দিকে বকশীগঞ্জ পৌরসভার পাটহাটি এলাকায় হামলার শিকার হন বাংলানিউজের জেলা প্রতিনিধি গোলাম রব্বানী নাদিম। তাকে ১০-১২ জনের একদল দুর্বৃত্ত পিটিয়ে আহত করে। পরে স্থানীয় এক সাংবাদিকসহ কয়েকজন তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠান। পরে রাত দেড়টার দিকে জামালপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। রাতেই উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার দুপুরে তার মৃত্যু হয়।
বিজ্ঞাপন
এদিকে সাংবাদিক গোলাম রব্বানী নাদিমকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় অভিযোগের তীর উপজেলার সাধুরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা মাহমুদ আলম বাবুর দিকে। তার বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ করায় সাংবাদিক গোলাম রব্বানী নাদিমকে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ নিহতের পরিবারের।
আরও পড়ুন : জামালপুরে দুর্বৃত্তদের হামলায় আহত সাংবাদিকের মৃত্যু
পৌরসভার সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, রাত সাড়ে ১০টার দিকে পেশাগত কাজ শেষে মোটরসাইকেল করে বাসায় ফিরছিলেন গোলাম রব্বানী নাদিম। এ সময় তার চলন্ত মোটরসাইকেলের পেছনে কয়েকজন দৌড়ে গিয়ে তাকে নামিয়ে মারধর করেন।
ওসি সোহেল রানা বলেন, সিসিটিভি ফুটেজের লোকদের চিহ্নিত করেছে পুলিশ। তাদের মধ্যে তিনজনকে আটক করা হয়েছে। বাকিদের আটকের চেষ্টা চলছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কিছু দিন আগে সাধুরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মাহমুদ আলম বাবুকে নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন তার দ্বিতীয় স্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন। স্ত্রীর মর্যাদার পেতে সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি। ওই সংবাদ সম্মেলনের খবর বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। ওই সংবাদ প্রকাশের ঘটনার জেরে গোলাম রব্বানী নাদিমসহ কয়েকজন সাংবাদিকের নামে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন ইউপি চেয়ারম্যান। ওই মামলা গতকাল বুধবার ময়মনসিংহের সাইবার ট্রাইব্যুনাল খারিজ করে দেন। রাতে সাংবাদিক নাদিমের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে।
নাদিমের ছেলে আব্দুল্লাহ আল মামুন রিফাতের অভিযোগ, সংবাদ প্রকাশকে কেন্দ্র করে সাধুরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবুর নেতৃত্বে এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। চেয়ারম্যানের ছেলেসহ কয়েকজন নাদিমের ওপর হামলা করেন।
মাহমুদুল আলম বাবু বকশীগঞ্জ উপজেলার সাধুরপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। এ ঘটনার পর থেকেই চেয়ারম্যান বাবু পলাতক রয়েছেন। তাকে বার বার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
আরএআর