পানিতে ডুবে ভাইয়ের মৃত্যু, ছাদ থেকে পড়ে প্রাণ গেল বোনের
কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলায় ডোবার পানিতে ডুবে নিরব মোল্লা (১২) এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। নিরবের মৃত্যুর সংবাদ শুনে তার বড় বোন নাজা বেগম (১৮) বাসার ছাদ থেকে পড়ে নিহত হয়েছেন।
সোমবার বিকেল আনুমানিক সাড়ে ৫টার দিকে ভৈরব পৌর শহরের চন্ডিবের মোল্লা বাড়ি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নাজা বেগম ও নিরব ওই এলাকার বাছির মোল্লার সন্তান।
বিজ্ঞাপন
সোমবার বিকেল পৌনে ৫টার দিকে ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী নিরব পাশের একটি মাঠে বন্ধুদের সাথে ফুটবল খেলতে যায় এবং খেলার এক পর্যায়ে ফুটবলটি ডোবায় পড়ে যায়। নিরব ফুটবলটি পানি থেকে তুলতে গিয়ে নিজে ডুবে যায়। তার কয়েকজন সহপাঠী তাকে পানি থেকে উদ্ধার করে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
স্বজনদের অনুরোধে নিরবের ইসিজির জন্য পাশের একটি প্রাইভেট ক্লিনিক থেকে নার্স খাদিজাকে ডেকে আনা হয়। ইসিজির পরও নিরবকে মৃত ঘোষণা করা হলে তার স্বজনরা উত্তেজিত হয়ে নার্স খাদিজাকে মারধর শুরু করেন। এক পর্যায়ে তাকে রক্ষায় কর্তব্যরত চিকিৎসক ও কর্মচারীরা এগিয়ে এলে তাদেরও জখম করা হয়।
এদিকে বড় বোন নাজা বেগম ছোট ভাইয়ের মৃত্যুর খবর শুনে তার বাসার দোতলা থেকে পড়ে যায়। স্বজনরা তাকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে গেলে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন। তবে অ্যাম্বুলেন্সে ঢাকার নেওয়ার পথে নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ এলাকায় যাওয়ার পর নাজা বেগমও মারা যান। তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চন্ডিবের মোল্লা বাড়ির বাসিন্দা ও রফিকুল ইসলাম মহিলা কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. শহীদুল্লাহ।
নিরবের চাচা নাছির মোল্লা বলেন, আমার ভাতিজা পানিতে ডুবে মারা যায়। এ খবর পেয়ে ভাতিজি দোতলার ছাদ থেকে পড়ে যায়। হাসপাতালে ঘটে যাওয়া ঘটনাটি দুঃখজনক। এর জন্য আমরা দুঃখ প্রকাশ করছি।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. রওশন আরা রিপা বলেন, নিরব নামের শিশুটিকে হাসপাতালে আনার পর তাকে মৃত পাই। স্বজনদের চাপে ইসিজি করা হয়েছে। হাসপাতালে কর্মী না থাকায় বাইরের ক্লিনিক থেকে নার্স খাদিজাকে ডেকে আনা হয়। ইসিজি করার পর মৃত ঘোষণা করা হলেও নিরবের স্বজনরা আমার ওপর চড়াও হয় এবং আমাকে তারা শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে। অফিসের কর্তব্যরত উপ-সহকারী সেলিম মিয়াকে মারধর করে। এ সময় তারা আরও তিনজনকে মেরে জখম করে। অপরদিকে নিরবের বোন নাজা বেগমকে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হলে তাকে ঢাকায় রেফার করা হয়।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. বুলবুল আহমেদ বলেন, ঘটনাটি দুঃখজনক। মারা যাওয়া রোগীকে ডাক্তাররা জীবিত করে দিতে পারবেন না। শিশুর স্বজনরা ডাক্তারসহ চারজনকে মেরে আহত করেছে। বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়। আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে ঘটনা জানিয়ে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার চিন্তা করছি।
এনএফ