ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে টিউবওয়েল চুরির অভিযোগে দুই শিশুকে নির্মমভাবে নির্যাতনের ঘটনায় ইউপি সদস্য নাজমুল শেখসহ পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরও দুই-তিনজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

শুক্রবার (৯ জুন) বিকেল ৪টার দিকে ভুক্তভোগী এক শিশুর বাবা আলীবার শেখ (৫৫) বাদী হয়ে বোয়ালমারী থানায় এ মামলা দায়ের করেন। পুলিশ এ মামলার এজাহারভুক্ত আসামি গুনবহা ইউনিয়নের চাপলডাঙ্গা গ্রামের হাবিল খানকে (৪৫) গ্রেপ্তার করেছে।

পুলিশ জানায়, নির্যাতনের ঘটনার পর ভয়ে ওই দুই শিশু তাদের অভিভাবকসহ পাশের আলফাডাঙ্গা উপজেলায় এক আত্মীয়ের বাড়িতে আত্মগোপন করে থাকে। পরে তাদের আজ শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে নিরাপত্তা নিশ্চিতের আশ্বাস দিয়ে বোয়ালমারী থানায় নিয়ে আসা হয়। পরে এক শিশুর বাবা বাদী হয়ে এ মামলাটি দায়ের করেন।

মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে দুই শিশুকে অপহরণ করে তপ্ত রোদের মধ্যে শুইয়ে দুই পা শেকল দিয়ে বেঁধে লোহার রড ও বাঁশের  লাঠি দিয়ে হত্যার চেষ্টা করা, পকেটে বাজার করার টাকা চুরি করা, ভয়ভীতি-হুমকি ও নির্দেশ প্রদানের অভিযোগে আনা হয়েছে।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বোয়ালমারী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আব্দুল ওহাব বলেন, মামলার এজাহারভুক্ত বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চলছে। পাশাপাশি ওই দুই শিশুকে বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বোয়ালমারী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্দুর রহমান বলেন, আগামীকাল শনিবার (৯ জুন) গ্রেপ্তার হওয়া হাবিল খানকে পাঁচ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানিয়ে আদালতে সোপর্দ করা হবে।

প্রসঙ্গত, উপজেলার গুনবহা ইউনিয়নের চাপলডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা আট নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য নাজমুল শেখের বড় ভাই নজরুল শেখের একটি টিউবয়েলের মাথা সম্প্রতি চুরি হয়। এ ঘটনার জেরে ইউপি সদস্য মো. নাজমুল শেখ (৩৯), তার ভাই নজরুল শেখসহ (৪৩) এলাকার আরও কয়েকজন লোক টিউবওয়েল চুরির অভিযোগে ৬ জুন দুপুরে ধানের চাতালে প্রখর রোদের মধ্যে দুই শিশুকে শুইয়ে, তাদের পায়ে শেকল বেঁধে লোহার রড ও বাঁশের লাঠি দিয়ে বেধড়ক পিটিয়ে আহত করে। পরবর্তীতে এই নির্যাতনের একটি ভিডিও ৭ জুন দুপুরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়।

নির্যাতনের অভিযোগে স্থানীয় ইউপি সদস্যের ভাই নজরুল শেখকে বুধবার পুলিশ আটক করে বৃহস্পতিবার দুপুরে আদালতে সোপর্দ করে। তবে গতকাল পর্যন্তও এ ঘটনায় মামলা না হওয়ায় পুলিশ তাকে ধর্তব্য আইনে আদালতে পাঠালে আদালত তাকে গতকালই মুক্তি দিয়ে দেন। এরপর থেকে তিনি পলাতক রয়েছেন।

জহির হোসেন/এবিএস