ফেনীতে মা-ছেলের মরদেহ উদ্ধার, গ্রেপ্তার ৪
ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার আমিরাবাদ ইউনিয়নের চরডুব্বা গ্রামের গৃহবধূ হাজেরা খাতুন মনি (২৭) ও তার ছেলে ইমরান হোসেন ইয়ামিনকে (৬) হত্যার অভিযোগে দায়েরকৃত মামলায় চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (৬ জুন) সন্ধ্যায় সোনাগাজী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মু. খালেদ হোসেন ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বিজ্ঞাপন
তিনি জানান, এ মামলায় এখন পর্যন্ত চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতদের রিমান্ড আবেদনসহ আদালতে পাঠানো হয়েছে।
এর আগে সোমবার (৫ জুন) রাতে নিহত হাজেরা খাতুন মনির মা জাহানারা বেগম বাদী হয়ে মেয়ের স্বামী মো. নুর আলম সোহেলকে প্রধান আসামি করে ছয়জনের নাম উল্লেখ ও একজনকে অজ্ঞাত আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশ বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে সোমবার রাত ও মঙ্গলবার চারজনকে গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- পলাতক সোহেলের ভাই সাইফুল (৩৫) ও দিদার (২৮), সোহেলের বন্ধু চরলামছি গ্রামের সৈয়দ রহমানের ছেলে নুরুল আবছার এবং ভগ্নিপতি ফেনী সদর উপজেলার ধলিয়া ইউনিয়নের সাড়াশিয়া গ্রামের মৃত আবদুল ওহাবের ছেলে মো. হানিফ। মামলার অন্য আসামিরা হলেন- নিহত মনির শাশুড়ি কমলা বেগম, জা নাজমা আক্তার ও নয়ন।
আরও পড়ুন : ফেনীর সোনাগাজীতে শিশু সন্তানসহ নারীর মরদেহ উদ্ধার
এদিকে আজ মঙ্গলবার বিকেলে ময়নাতদন্ত শেষে সোনাগাজীর মঙ্গলকান্দি ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর গ্রামের উকিল বাড়িতে নিহত মনি ও তার শিশুসন্তানের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। এর আগে তাদের মরদেহ পৌঁছালে গ্রামে শোকের ছায়া নেমে আসে।
মনির মা জাহানারা বেগম ঢাকা পোস্টকে বলেন, সপ্তাহখানেক আগে আমার কাছ থেকে মেয়ের স্বামী দুই লাখ টাকা চেয়েছিল। আমি বলেছি, ‘এখন আমরা ঋণগ্রস্ত তাই টাকা দেওয়া সম্ভব নয়। পরে আমার মেয়ের স্বামী মো. নুর আলম সোহেল আমার মেয়ের মোবাইল ভেঙে ফেলে। আমার মেয়েকে সেদিন গলায় ছুরি ধরে হত্যা করতে চেয়েছিল। এমনকি সে (নুর আলম সোহেল) আমার বোনদের কাছ থেকেও টাকা দাবি করেছে।
মামলার এজাহারে জাহানারা বেগম উল্লেখ করেন, সোহেল নিজের পৈতৃক সূত্রে পাওয়া তিন শতক জমি তার দুই ভাইয়ের কাছে বিক্রি করে দেন। তবে তার স্ত্রী হাজেরা খাতুন ওই জমি বিক্রি করতে রাজি ছিলেন না। এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রী, দেবর, ভাশুর ও শাশুড়ির মধ্যে পারিবারিক কলহ সৃষ্টি হয়।
আরও পড়ুন : সেই গৃহবধূর দুই হাতের কবজিতে কাটা চিহ্ন, পেটে ছুরিবিদ্ধ
এদিকে চিকিৎসাধীন নিহত মনির আরেক শিশুসন্তান আরাফাতের শারীরিক অবস্থা প্রসঙ্গে ফেনী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক স্বাস্থ্য কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. আসিফ ইকবাল জানান, তার শারীরিক অবস্থা উন্নতির দিকে রয়েছে।
উল্লেখ্য, সোমবার (৫ জুন) স্বামীর গৃহে গলায় ফাঁস দেওয়া ঝুলন্ত হাজেরা খাতুন মনি ও খাটে শোয়া অবস্থায় ছেলে মো. ইমরান হোসেন ইয়ামিনের মরদেহ পাওয়া যায়। আর ১৩ মাস বয়সী অপর শিশুসন্তান ইরফান হোসেন আরাফাতকে অসুস্থ অবস্থায় ফেনী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায় স্বজনরা।
এমজেইউ