যুবলীগ নেতা জেম হত্যা মামলায় পৌর মেয়র কারাগারে
চাঁপাইনবাবগঞ্জের সাবেক যুবলীগ নেতা ও সাবেক পৌর কাউন্সিলর খাইরুল আলম জেম হত্যার ঘটনায় উচ্চ আদালতে জামিন পাওয়া প্রধান আসামি চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মোখলেসুর রহমানকে কারাগারে প্রেরণ করেছেন আদালত। মঙ্গলবার (৬ জুন) দুপুরে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত-২ এর বিচারক নির্মলেন্দু দাশ এই আদেশ দেন।
পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) নাজমুল আজম বলেন, জেম হত্যা মামলার প্রধান আসামি আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। জামিন বাতিলের বিষয়টি আমরা তুলে ধরি। পরে আদালত বিচার-বিশ্লেষণ করে জামিন বাতিল করে কারগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
বিজ্ঞাপন
তিনি আরও বলেন, মামলার মোট ৪৮ জন আসামি। তার মধ্যে ৩৪ জন আসামি উচ্চ আদালতে জামিন নেন। গত ৩০ মে উচ্চ আদালতে জামিন পাওয়া ৩২ জন আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করেন। পরে আদালত ২৬ জনকে জামিন দেন। এর আগে ৩ মে উচ্চ আদালতে তারা জামিন নেন। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ৫ জন আসামি ১৬৪ ধারায় ১২ জন আসামির সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছেন।
আসামিপক্ষের আইনজীবী নজরুল ইসলাম বলেন, আমরা মনে করি, আদালত বিচার বিশ্লেষণ করে সঠিক সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। আসামিদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ পর্যালোচনা করেই আদালত সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। এ ঘটনায় ১২ জন আসামি সরাসরি জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন। কারাগারে প্রেরণের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করা হবে।
অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম আরও বলেন, হাইকোর্ট থেকে জামিন পাওয়ার পর আদালতে উপস্থিত হয়ে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। এর আগে গত ৩০ মে আদালতে উপস্থিত হয়ে আত্মসমর্পণ করার কথা থাকলেও মামলার প্রধান আসামি মোখলেসুর রহমান শারীরিকভাবে অসুস্থ থাকায় উপস্থিত হতে পারেননি। সুস্থ হওয়ার পরই আজ আদালতে আত্মসমর্পণ করেন।
এর আগে ৩০ মে দুপুরে জেম হত্যা মামলার ৩২ আসামি আদালতে উপস্থিত হয়ে জামিন আবেদন করে। পরে আদালতের বিচারক ২৬ জনের জামিন বহাল রেখে ৬ জনের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। কারাগারে যাওয়া আসামিরা হলেন- গত চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনের উপ-নির্বাচনে সংসদ সদস্য পদে অংশ নেওয়া প্রার্থী ও বহিষ্কৃত জেলা যুবলীগের সভাপতি সামিউল হক লিটন, চরবাগডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শহীদ রানা টিপু, আব্দুল কাদের, আলমগীর হোসেন, জামিল হোসেন, মাহিন রেজা উরফে মুমিন।
উল্লেখ্য, গত ১৯ এপ্রিল চাঁপাইনবাবগঞ্জের উদয়ন মোড় এলাকায় ইফতারির বাজার করার সময় খাইরুল আলম জেমকে দেশি-বিদেশি ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করা হয়। পরে স্থানীয়রা আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেলা হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে অবস্থার অবনতি হলে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। হত্যাকাণ্ডের তিন দিন পর গত ২২ এপ্রিল রাত ২টার দিকে খাইরুল আলম জেমের বড় ভাই মনিরুল ইসলাম বাদী হয়ে সদর মডেল থানায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার মেয়র ও দুই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানসহ ৪৮ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন।
জাহাঙ্গীর আলম/এবিএস