বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে জাতীয় পার্টি মনোনীত লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী ইকবাল হোসেন তাপস ৩০ দফা ইশতেহার ঘোষণা করেছেন। রোববার (৪ জুন) বরিশাল ক্লাব মিলনায়তনের হল রুমে আনুষ্ঠানিকভাবে ইশতেহার ঘোষণা দেন তিনি। 

এর আগে ইকবাল হোসেন তাপস বলেন, বরিশালে এখনো লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড হয়নি। নৌকার প্রার্থী নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করলেও তা দেখে না নির্বাচন কমিশন। তাদের কাছে অভিযোগ দিলেও তারা অভিযোগ নেন না।

তিনি বলেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনার আমাকে আশ্বস্ত করেছেন ভোট সুষ্ঠু হবে। এজন্য আমি নির্বাচনে রয়েছি। মূলত স্থানীয় প্রশাসন অতি উৎসাহী হয়ে এক পাক্ষিক আচরণ করছে। তার দাবি নিরপেক্ষ ভোটের জন্য সকল প্রার্থীকে সমান দৃষ্টিতে প্রশাসনের দেখা উচিত।

নির্বাচনী ইশতেহারে তাপস বলেন- নির্বাচিত হতে পারলে অতি গুরুত্বের সঙ্গে যে কাজগুলো করবো সেগুলো হচ্ছে- 

১. বরিশাল সিটি কর্পোরেশন উৎপাদনমুখী মেগা সিটিতে পরিণত করা।
২. প্রশস্ত রাস্তা নির্মাণ ও জনসাধারণের হাঁটার জন্য ফুটপাথের ব্যবস্থা করা।
৩. রাস্তা-ঘাট নির্মাণের দরপত্রে ১০০% স্বচ্ছতার নিশ্চয়তা।
৪. শহরের ঐতিহ্যবাহী খালসমূহ খনন ও সংস্কার করে পুনরুদ্ধারসহ দুই পাড়ে সৌন্দর্যবর্ধন ও ফুটপাত নির্মাণসহ জনসাধারণের হাঁটার রাস্তা নির্মাণ করা।
৫. শহরের ঐতিহ্যবাহী দিঘি ও পুকুর সংস্কার করে পরিবেশ বান্ধব করে গড়ে তোলা।
৬. আধুনিক ব্যবস্থাপনায় সূর্যোদয়ের পূর্বে শহর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা।
৭. পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা আধুনিকীকরণ ও বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের ব্যবস্থা করা ।
৮. প্রত্যেক ওয়ার্ডে কম খরচে/ফ্রি চিকিৎসা সেবা কেন্দ্র স্থাপন করা।
৯. প্রতিটি মহল্লা ও সড়কে ডিজিটাল বাতি স্থাপন করা।
১০. শহরের প্রতিটি মহল্লায় রাতে পাহারার ব্যবস্থা ও নিরাপত্তা গেট নির্মাণ করা।
১১. সিটি কর্পোরেশনের ব্যবস্থাপনায় ইংরেজি মাধ্যম স্কুল প্রতিষ্ঠা এবং ছাত্র-ছাত্রীদের যাতায়াত ব্যবস্থা নিশ্চিত করা।
১২. সিটি কর্পোরেশনের ব্যবস্থাপনায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা।
১৩. সিটি কর্পোরেশনের ব্যবস্থাপনায় মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা এবং মেডিকেল বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় আধুনিকায়ন করা।
১৪. সিটি কর্পোরেশনের ব্যবস্থাপনায় আধুনিক কম্পিউটার কারিগরি প্রতিষ্ঠান তৈরি করে বেকার যুবক-যুবতিদের প্রশিক্ষণ দিয়ে আউট সোর্সিং কর্মসংস্থানের মাধ্যমে বেকারত্ব দূরীকরণ।
১৫. সিটি কর্পোরেশনের ব্যবস্থাপনায় মা ও শিশুর স্বাস্থ্য সুরক্ষায় আধুনিক হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করা ।
১৬. নগরে অবস্থিত ধর্মীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহ আধুনিকীকরণ করা।
১৭. ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সহাবস্থান নিশ্চিত করা।
১৮. ওয়ার্ডে কমিউনিটি সেন্টার প্রতিষ্ঠা ও সাংস্কৃতিক বিকাশ কেন্দ্র গড়ে তোলা।
১৯. প্রতিটি ওয়ার্ডে সাংস্কৃতিক ক্লাব ও খেলাধুলার মাঠ প্রতিষ্ঠা করা।
২০. নগরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানসমূহকে সংস্কার ও আধুনিকীকরণ করা ও স্কুলসমূহে শিশুদের জন্য শিক্ষাবান্ধব পরিবেশ তৈরি করা।
২১. নগরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা।
২২. কীর্তনখোলার তীরঘিরে ভ্রমণ, আধুনিক ওয়াকওয়েসহ পার্ক গড়ে তোলা।
২৩. বরিশালে পর্যটন হোটেল-মোটেল নির্মাণ ও পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলা ।
২৪. মাদক নির্মূল করা ও মাদকের বিরুদ্ধে জনসচেতনতা গড়ে তোলা।
২৫. ধর্মীয় স্থানসমূহ সংরক্ষণ ও সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করা।
২৬. বরিশাল সিটিকে সবুজায়ন করার প্রকল্প গ্রহণ করা।
২৭, শহরের বিভিন্ন পেশার ব্যক্তিদের সমন্বয়ে উন্নয়নের লক্ষ্যে কমিটি গঠন করা।
২৮. বয়স্ক নাগরিকদের অগ্রাধিকারভিত্তিক সুযোগ-সুবিধা ও সেবা চালু করা।
২৯. নগরের বর্ধিত এলাকায় পরিকল্পিত আধুনিক আবাসন ও রাস্তাঘাট নির্মাণ, সুপেয় পানি, বিদ্যুৎসহ সকল প্রকার নাগরিক সুবিধা প্রদান করা হবে।
৩০. বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের অন্তর্গত অনুন্নত কলোনি বা বাস্তুহারাদের সকল প্রকার নাগরিক সুবিধার আওতায় আনা হবে।

ইশতেহার ঘোষণা অনুষ্ঠান পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে শুরু হয়। এরপর জাতীয় সংগীত ও দলীয় সংগীত পরিবেশন করা হয়। ইশতেহার ঘোষণা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় পার্টির নির্বাচনী সমন্বয়ক অধ্যাপক মহসিন উল ইসলাম হাবুল।

সৈয়দ মেহেদী হাসান/আরএআর