নরসিংদীর মনোহরদীতে প্রেমিকার টিকটক আইডি উদ্ধার করাকে কেন্দ্র করে এক প্রেমিকের ছুরিকাঘাতে আহত আরেক প্রেমিক শরিফ মিয়ার (২১) মৃত্যু হয়েছে। ২ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর বৃহস্পতিবার (১৮ মে) বিকেলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এর আগে গত মঙ্গলবার (১৬ মে) বিকেলে উপজেলার চন্দনপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত শরিফ চালাকচর ইউনিয়নের বাঘবের গ্রামের মফিজ উদ্দিনের ছেলে।

পুলিশ ও নিহতের স্বজনরা জানায়, মাধুপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণি পড়ুয়া এক মেয়ের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল শরিফের। শরিফ প্রবাসে চলে যাওয়ার পর চন্দনবাড়ী ইউনিয়নের চন্দনপুর গ্রামের আতিকুল ইসলামের ছেলে শাকিলের সঙ্গে মেয়েটি প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। শাকিল তার প্রেমিকার টিকটক আইডির পাসওয়ার্ড জানত। সে প্রেমিকার টিকটক আইডিতে বিভিন্ন ধরনের আপত্তির ভিডিও আপলোড দিত। এ নিয়ে প্রেমিক শাকিল ও প্রবাস ফেরত সাবেক প্রেমিক শরিফের মাঝে দ্বন্দ্ব হয়।

শরিফ মঙ্গলবার বিকেলে উপজেলার চন্দনপুর গ্রামে শাকিলকে টিকটক আইডিতে আপত্তিকর ভিডিও না ছাড়তে নিষেধ করে ও আইডির পাসওয়ার্ড চায়। শাকিল তা দিতে অস্বীকার করে। পরে দুজনের মধ্যে শুরু হয় হাতাহাতি। হাতাহাতির এক পর্যায়ে শাকিল ছুরি দিয়ে শরিফকে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে। শরিফ রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। স্থানীয়রা শরিফকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। তার অবস্থায় অবনতি দেখে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার বিকালে তার মৃত্যু হয়।
এই খবর ছড়িয়ে পড়লে নিহতের পরিবারে শোকের ছায়া নেমে আসে। 

কাঁদতে কাঁদতে নিহতের বাবা মফিজ উদ্দিন বলেন, ছেলেকে নিয়ে অনেক স্বপ্ন ছিল। খুনিদের ছুরির আঘাতে সব শেষ হয়ে গেল। আমার ছেলেকে যারা হত্যা করেছে আমি তাদের বিচার চাই। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মনোহরদী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফরিদ উদ্দিন বলেন, প্রেমের ঘটনার জের ধরে এই ঘটনা ঘটেছে। ঘটনার পর নিহতের বাবা মহিউদ্দিন বাদী হয়ে শাকিলকে প্রধান আসামি করে ৬ জনের বিরুদ্ধে থানায় হত্যার চেষ্টা মামলা দায়ের করে। শরিফের মৃত্যুতে সেই মামলা হত্যা মামলায় রূপান্তরিত হবে। এই ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।

আরকে