ঘূর্ণিঝড় মোখা পটুয়াখালী উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে। ইতোমধ্যে আবহাওয়া অধিদপ্তর ৮ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে। কিন্তু এরপরও জনমনে নেই কোনো সচেতনতা।

সমুদ্র সৈকত কুয়াকাটার ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোতে এখনো বসবাস করছেন হাজার হাজার মানুষ। প্রতিবছর ঘূর্ণিঝড়ের আভাস থাকায় জনমনে নেই কোনো সচেতনতা। এদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তরের ১৫ নম্বর বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৮ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৪৫ কিলোমিটার দক্ষিণে ঘূর্ণিঝড় মোখা অবস্থান করছে।

কুয়াকাটা হোসেন পাড়া এলাকার কৃষক আব্দুল মজিদ খান ঢাকা পোস্টকে বলেন, প্রতিবছর আমরা ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকি। এ বছরও খুব চিন্তায় আছি যে ঘূর্ণিঝড় আসবে কিনা। তবে আকাশের অবস্থা থমথম বিরাজ করছে।

চর গঙ্গামতি এলাকার দিনমজুর মিরাজ হোসেন বলেন, ঘূর্ণিঝড় হবে এ কারণে দুইদিন ধরে কোনো কাজ নেই হাতে। আকাশে সামান্য মেঘ দেখা যাচ্ছে, প্রচুর গরম পড়ছে। কোনো বাতাস নেই। তবে শুনতে পেয়েছি ৮ নম্বর মহাবিপদ সংকেত চলছে। আল্লাহ যা করেন ঘরেই থাকব।

পটুয়াখালী জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ৭০৩টিরও বেশি আশ্রয়ণকেন্দ্র ও ২৬টি মুজিব কিল্লা প্রস্তুত রয়েছে। এসব আশ্রয়ণকেন্দ্রে ২ লাখেরও বেশি মানুষ ও গবাদি পশু আশ্রয় নিতে পারবে। সিপিপি সদস্য রয়েছে ৪৩৫টি ইউনিটের প্রতিটিতে ২০ জন‌ করে ৮ হাজার ৭০০ জন, জেলায় রেডক্রিসেন্ট স্বেচ্ছাসেবক রয়েছে ২ শতাধিক। ৭৮টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে।

মহিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আবুল খায়ের বলেন, আবহাওয়া অধিদপ্তরের আভাস পাওয়ার পর থেকেই আমরা কাজ করে যাচ্ছি। কোন পর্যটককে সমুদ্রে নামতে দেওয়া হচ্ছে না। যে সব পর্যটকরা সমুদ্রে রয়েছে তাদের হোটেলে অবস্থান করার জন্য আমরা বারবার মাইকিং করছি। এছাড়াও ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ এলাকাতে যে মানুষজন রয়েছে তাদেরকে আশ্রয়ণকেন্দ্রে নেওয়ার জন্য সচেতন করা হচ্ছে।

পটুয়াখালী ৪ আসনের সংসদ সদস্য মুহিবুর রহমান মুহিব বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আমরা জনগণের সঙ্গে রয়েছি। যেকোনো পরিস্থিতিতে তাদের পাশে থাকব। মানুষদের সচেতন করা হচ্ছে যাতে তাদের ঝুঁকিপূর্ণ ঘরবাড়ি ছেড়ে তারা যেন আশ্রয় কেন্দ্রে চলে যান। তাছাড়া এই ঘূর্ণিঝড় না যাওয়া পর্যন্ত আমরা মাঠেই থাকব।

মাহমুদ হাসান রায়হান/এমএ