বিজ্ঞানের শিক্ষার্থী হয়েও পরীক্ষা দিতে হচ্ছে মানবিক বিভাগে
চলতি বছরের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভুলে ভোগান্তির সম্মুখীন হয়েছেন পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ার দুই পরীক্ষার্থী। তারা হলেন- বুড়াবুড়ী মির্জা গোলাম হাফিজ উচ্চ বিদ্যালয়ের মো. মুনির উজ্জামান ও শিলাইকুঠি বালাবাড়ি দাখিল মাদরাসার শিক্ষার্থী সুমাইয়া আক্তার।
জানা যায়, বুড়াবুড়ী মির্জা গোলাম হাফিজ উচ্চ বিদ্যালয়ের পরীক্ষার্থী মো. মুনির উজ্জামান পড়াশোনা করেছেন বিজ্ঞান বিভাগ থেকে। কিন্তু পরীক্ষার প্রবেশপত্রে জানতে পারেন বিজ্ঞান বিভাগের জায়গায় তার মানবিক বিভাগে ফরম ফিলাপ হয়েছে। উপায়ন্তর না পেয়ে বিজ্ঞান বিভাগে পড়াশোনা করলেও পরীক্ষা দিতে হচ্ছে মানবিক বিভাগে। বিষয়টি মেনে নিতে পারছে না পরীক্ষার্থী ও তার পরিবার। এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় ভুগছেন শিক্ষার্থী মুনির উজ্জামান। মুনির উজ্জামান উপজেলার বুড়াবুড়ি ইউনিয়নের মন্ডলপাড়া গ্রামের বাবুল হোসেনের ছেলে।
বিজ্ঞাপন
পরীক্ষার্থীর মা শাহিদা বেগম সাংবাদিকদের জানান, ছেলে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে লেখাপড়া করেছে। কিন্তু স্কুলের শিক্ষকদের ভুলের কারণে ছেলেকে মানবিকে পরীক্ষা দিতে হচ্ছে। সে তো মানবিকের কোনো বিষয় পড়েনি। বিষয়টি সমাধানের জন্য স্কুলে গিয়েছিলাম। তারা আমাদের কাছ থেকে দুই ধাপে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত নিয়েছে।
মুনির উজ্জামানের বোন মুনিরা পারভীন বলেন, স্কুল কর্তৃপক্ষের ভুলের কারণে বিজ্ঞান বিভাগে পড়েও আমার ভাইকে মানবিক বিভাগে পরীক্ষা দিতে হচ্ছে। বিষয়টি দ্রুত সমাধান করে দেওয়া হোক। যাতে আমার ভাই ভালোভাবে পরীক্ষা দিতে পারে।
আজ বুধবার বিকেল ৫টার দিকে বুড়াবুড়ী মির্জা গোলাম হাফিজ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা মোছা. জাহানাহারা বেগম জানান, মুনির উজ্জামানের বিষয়টি সমাধান করে আনা হয়েছে। এখন সে যে বিভাগ থেকে পড়েছে, সে বিভাগের বিষয়েই পরীক্ষা দিতে পারবে। তবে বিভাগ সংশোধনের নামে যে টাকা নেওয়ার অভিযোগ করা হচ্ছে, তা ঠিক নয়।
এদিকে শিলাইকুঠি বালাবাড়ি মাদরাসার দাখিল পরীক্ষার্থী সুমাইয়া আক্তার পরীক্ষার আগের দিন প্রবেশপত্র নিতে গিয়ে জানতে পারেন তার ফরম ফিলাপই হয়নি। এ ঘটনায় ভেঙে পড়েন ওই পরীক্ষার্থী। পরে জেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপে পরীক্ষা দিতে পারছেন সুমাইয়া আক্তার। তবে মাদরাসার সুপারের বিরুদ্ধে উঠেছে প্রবেশপত্র বাবদ টাকা নেওয়ার অভিযোগ।
আজ বুধবার দুপুরে মাদরাসায় গিয়ে জানা যায়, এ বছর মাদরাসা থেকে ১৭ জন শিক্ষার্থী দাখিল পরীক্ষা দিচ্ছেন। তাদের প্রত্যেকের কাছ থেকে প্রবেশপত্র বাবদ ৫০০ টাকা করে নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। পরীক্ষার রাতে কথা হলে সুমাইয়া আক্তার মাদরাসায় প্রবেশপত্র নিতে গিয়ে ৫০০ টাকা দেওয়ার কথা জানান।
তবে প্রবেশপত্র বাবদ টাকা নেওয়ার বিষয়টি ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন মাদরাসার সুপার বদরুল আলম সরকার। আজ বিকেলে মুঠোফোনে তার সঙ্গে কথা হলে জানান, কোনো শিক্ষার্থীর কাছ প্রবেশপত্র বাবদ টাকা নেওয়া হয়নি। সুমাইয়া আক্তারের সমস্যা সমাধান হয়েছে। একটি ঘটনা ঘটেছে, এখন অনেকে অনেক ধরনের অভিযোগ করছে।
এ বিষয়ে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার শওকত আলী ঢাকা পোস্টকে বলেন, প্রথমত বুড়াবুড়ী মির্জা গোলাম হাফিজ উচ্চ বিদ্যালয়ের পরীক্ষার্থী মুনির উজ্জামানের বিভাগ পরিবর্তনের যে ভুল হয়েছিল তা সমাধান করে আনা হয়েছে। দ্বিতীয়ত, শিলাইকুঠি বালাবাড়ি দাখিল মাদরাসার পরীক্ষার্থী সুমাইয়া আক্তারের ঘটনাটি সবাই অবগত। প্রশাসনের হস্তক্ষেপে সুমাইয়া পরীক্ষা দিতে পারছে। তবে পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে প্রবেশপত্র বাবদ যে ৫০০ টাকা করে নেওয়া হয়েছে এই বিষয়টি জানা নেই। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এসকে দোয়েল/এমজেইউ